শ্রম আইন অনুযায়ী সাধারণ নির্দেশাবলী

সাধারণ নির্দেশাবলী
শ্রম আইনের সাধারণ নির্দেশাবলী

(১) নিয়োগপত্র ছাড়া কোন শ্রমিককে নিয়োগ করা যাইবে না। [ধারা ৫]

(২) স্থায়ী পদে শ্রমিক নিয়োগে প্রথম তিন মাস শিক্ষানবিসকাল গণ্য হবে। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করলে আরো তিন মাস শিক্ষানবিসকাল বৃদ্ধি করতে পারিবেন। কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিস কাল ছয় মাস। [ধারা ৪]

(৩) মালিক নিজ খরচে প্রত্যেক শ্রমিককে শ্রম আইন বিধিমালার ফরম ৬ এর তথ্য সম্বলিত ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র প্রদান করিবেন।

(৪) প্রত্যেক শ্রমিকের সার্ভিস বই ফরম ৭ মোতাবেক হালনাগাদ তথ্যসহ রক্ষণাবেক্ষণ করিতে হইবে

(৫) দৈনিক কাজের সময় ৮ ঘন্টা। সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার স্বাভাবিক কর্ম সময় অতিক্রম করিবে না। কাজের সময় সূচি শ্রম পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত হইবে।[ধারা ১০০, ১০২, ১১১]

(৬) দৈনিক সর্বোচ্চ ২ ঘন্টা অধিকাল (Over time) কাজ করানো যাইবে। অধিকাল কাজের জন্য কাউকে বাধ্য করা যাইবে না। অধিকাল কাজের ভাতা সাধারণ মজুরি হারের দ্বিগুণ হইবে। [ধারা ১০৮]

(৭) প্রত্যেক শ্রমিক প্রতি পঞ্জিকা বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি [ধারা ১১৫], ১৪ দিন পীড়া ছুটি [ধারা ১১৬], ১১ দিন উত্সব ছুটি [ধারা ১১৮] পাইবার অধিকারী হইবেন।

(৮) কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকগণ প্রতি ১৮ দিনে ১ দিন এবং চা বাগান সমূহের ক্ষেত্রে প্রতি ২২ দিনে ১ দিন হারে মজুরিসহ বাৎসরিক ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন। [ধারা ১১৭]।

(৯) প্রত্যেক শ্রমিক দোকান, বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে দেড় দিন এবং কারখানার ক্ষেত্রে সপ্তাহে একদিন হারে সাপ্তাহিক ছুটি পাইবেন। [ধারা ১০৩]

(১০) মহিলা শ্রমিকগণ প্রসূতি কালীন কমপক্ষে ১১২ দিন বা ১৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ভাতা পাইবেন।

(১১) কর্মসংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা ও পেশাগত ব্যাধির ক্ষেত্রে মালিক আইনের বিধান মোতাবেক শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ পরিশোধে বাধ্য। [ধারা ১৫০, ১৫১]

(১২) কোন পেশায় বা প্রতিষ্ঠানে কোন শিশুকে নিয়োগ করা যাইবে না বা কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না। [ধারা ৩৪]

(১৩) ১ বছর চাকরিকাল পূর্ণ করিয়াছেন এরূপ প্রত্যেক শ্রমিক প্রতি বছর ২ টি উত্সব ভাতা পাইবেন।

১৪) সেক্টর ভিত্তিক ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর গেজেটের চেয়ে কম হারে মজুরী পরিশোধ করা যাইবে না।

(১৫) ৫০ জনের অধিক শ্রমিক কর্মরত আছেন এরূপ কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে আইন মোতাবেক সেইফটি কমিটি গঠন করে বিধি মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালনা করিতে হইবে। [ধারা ৯০ক, বিধি ৮০-৮৫, তফসিল ৪]

(১৬) যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রত্যেক কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে হাইকোর্ট ডিরেক্টিভস-২০০৯ অনুযায়ী অভিযোগ কমিটি গঠন করিতে হইবে।

(১৭) কোন কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে ৪০ জনের অধিক মহিলা শ্রমিক নিয়োজিত থাকলে ছয় বছরের কম বয়সী শিশুদের পরিচর্যার জন্য উপযুক্ত মানের শিশু কক্ষের ব্যবস্থা রাখিতে হইবে। [ধারা ৯৪, বিধি ৯৪]

(১৮) যে সকল প্রতিষ্ঠানে ১০০ জন শ্রমিক রয়েছেন সেখানে মালিক প্রচলিত বীমা আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে গ্রুপ বীমা চালু করিবেন। [ধারা ৯৯]

(১৯) কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের উত্তোলক যন্ত্র (ক্রেন ও লিফট) সমূহ সরকার অনুমোদিত যোগ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রতি ছয়মাস অন্তত একবার সম্পূর্ণরূপে পরীক্ষিত হইবে এবং সক্ষমতার সনদ গ্রহণ করতে হবে । বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় রেজিস্টার সংরক্ষণ করতে হবে। [ধারা ৬৮, ৬৯]

(২০) প্রত্যেক কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখিতে হইবে

(২১) শ্রম আইনের ৩১৯ ধারায় বর্ণিত ক্ষমতা অনুযায়ী শ্রম পরিদর্শক বা তদুদ্ধ পর্যাযের কর্মকর্তা কারখানা ও প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শন করে আইন ও বিধিমালার আলোকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবেন।

(২২) শ্রম আইন ও বিধি মোতাবেক লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে কারখানা / প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা দন্ডনীয় অপরাধ।

(২৩) শ্রম আইনের লঙ্ঘন একটি ফৌজদারী অপরাধ। এই আইন লঙ্ঘনে অর্থদন্ডসহ কারাদন্ডের বিধান রয়েছে।

(২৪) বেআইনিভাবে চাকুরী ছেদ অথবা শ্রম আইনের কম সুবিধা প্রদানের অভিযোগ দাখিলের জন্য যে কোন শ্রমিক কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এর জেলা কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে পারবেন। 

এছাড়াও ১৬৩৫৭ (টোল ফ্রি) নম্বরে কল করেও অভিযোগ দাখিল করা যাইবে।

Post a Comment

0 Comments