প্রত্যেক নিয়োগকৃত ব্যক্তির কিছু সুনির্দিষ্ট কাজ থাকে যা তাকে অবশ্যই পালন করতে হবে এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে না পারলে জবাবদিহি করতে হবে। উক্ত কাজ সঠিক ভাবে করতে না পারলে এক পর্যায়ে দায়িত্ব অবহেলার কারণে চাকরীচ্যুত হতে হয়। অনেক সময় নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত স্টোরকিপার জানেই না তার আসলে কি কি কাজ করতে হয়। নিম্নে একটা রপ্তানীমুখী গার্মেন্টসে একজন স্টোরকিপারের দৈনন্দিন কি কি কাজ করতে হয় তার একটা মৌলিক ধারনা দেয়া হলঃ
১। কাঁচামাল গ্রহণ করাঃ একটি উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার কার্যাদেশ অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করতে বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল প্রয়োজন হয়। যেমন গার্মেন্টস তৈরী করতে প্রয়োজন হয়- কাপড়, সুতা, পলি, বিভিন্ন ধরনের লেভেল, জীপার, স্টীকার, ট্যাগ, কার্টুন সহ আর অনেক কাচামাল যা আবার বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সাপ্লায়ার সরবরাহ করে থাকে। এই সব সাপ্লাইয়ারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে সরবরাহকৃত মালামাল গ্রহণ করা একজন ষ্টোর কিপারের অন্যতম প্রধান কাজ।
২। কাঁচামাল সংরক্ষণঃ গ্রহণকৃত কাঁচামাল নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষন করে প্রয়োজনীয় অফিসিয়াল ডকুমেন্টস (চালান/ইনভয়েস/পেকিংলিস্ট) দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে বুঝিয়ে দিতে হবে এবং ফাইলে সংরক্ষণ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন ধরন বা রকমের মালামাল রাখার জন্য ভিন্ন ভিন্ন অথবা নির্ধারিত স্থান বা নির্দেশনা থাকে। মালামাল রাখার ক্ষেত্রে সেই নির্দেশনা অনুসরণ করেই মালামাল রাখতে হবে।
৩। Rearrangement/পুনঃসাজানোঃ বিভিন্ন কার্যাদেশের বিপরীতে আসা মালামাল ধীরে ধীরে ব্যবহার হতে থাকে এবং এরমধ্যে অন্য কার্যাদেশের মালামাল আসতে থাকে। এই অবস্থায় নতুন মালামাল রাখতে স্থান সংকুলান না হওয়া একটা নিত্য সমস্যা। এই সমস্যা নিরসনে যে সব মালামাল অধিকাংশ ব্যবহার হয়েছে তার পুনঃসাজানোর মাধ্যমে নতুন আগত মালামালের জন্য জায়গা তৈরী করতে হবে। একজন সচেতন স্টোরকিপার সপ্তাহে ২বার এই কাজটা করলে পরবর্তীতে আগত মালামাল রাখার সমস্যা অনেকাংশেই কমে যায়।
৪। কাঁচামাল ইস্যু/সরবরাহঃ নির্ধারিত কার্যাদেশের বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাঁচামাল সরবরাহ করা একজন স্টোরকিপারের নিয়মিত প্রধান কাজ। উৎপাদন বিভাগের পারফরমেন্স ঠিক রাখতে সঠিক সময়ে কাঁচামাল সরবরাহ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন ভাবেই এই সরবরাহের দেরী বা ত্রূটিযুক্ত মালামাল দেয়া যাবেনা।
৫। পুনঃগ্রহণঃ নির্ধারিত কার্যাদেশের বিপরীতে সরবরাহকৃত মালামাল অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন শেষে কিছু পরিমান অবশিষ্ট থাকে। এই বেঁচে যাওয়া মালামাল পুনঃগ্রহণ করে তা নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ন। অনেক ক্ষেত্রে বেঁচে যাওয়া মালামাল পরবর্তী কার্যাদেশেও কাজে লাগানো যায় যাতে করে কোম্পানী আর্থিকভাবে লাভবান হবে। তাই কোন অর্ডার শিপমেন্ট যাওয়ার পরেই উক্ত অর্ডারের বিপরীতে গৃহীত ও সরবরাহকৃত মালামালের হিসাব করে তা দায়িত্বপাপ্ত অফিসারকে জানানো দরকার।
৬। ডকুমেন্ট সংরক্ষণঃ বিভিন্ন সাপ্লাইয়ার কর্তৃক সরবরাহকৃত মালামালের চালান/পেকিংলিস্ট এবং উৎপাদন বিভাগে সরবারহকৃত ডেলিভারী স্লিপ/চাহিদাপত্র ইত্যাদি নির্দিষ্ট ফাইলে সংরক্ষণ করতে হবে।
৭। ট্রিমস কার্ড তৈরীঃ নির্ধারিত কার্যাদেশ বা অর্ডারের বিপরীতে গ্রহণকৃত মালামালের সেম্পল সংগ্রহ করে একটি নির্ধারিত শিট বা ফাইলে সুনির্ধিষ্টভাবে সাজিয়ে তৈরী করতে হয়। এটি প্রয়োজনভেদে ৩-৬ কপি পর্যন্ত দরকার হতে পারে যা দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্চেন্ডাইজার কর্তৃক অনুমোদন করে নেয়া।
৮। বিবিধঃ উল্লিখিত কাজ ছাড়াও একজন স্টোরকিপারকে ছোট খাট কিছু বিবিধ কাজ করতে হয় যা ঊর্ধ্বতন অফিসার কর্তৃক অর্পিত হয়। যেমন চালান লেখা, গেটপাশ লেখা, শিপমেন্টে সহযোগিতা করা, ইলাস্টিক, জীপার ওয়াশ ইত্যাদি।
৯। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ বিভিন্ন রকমের কাঁচালাম থাকা, রাখা ও সরবরাহের কারণে স্টোরে তুলনামূলকভাবে আবর্জনা বেশী হয়। তাই পরিচ্ছন্নকর্মীর সহযোগিতায় ষ্টোর সবসময় যাতে পরিস্কার থাকে তা একজন স্টোরকিপারকে নিশ্চিত করতে হবে।
১০। নিরাপত্তাঃ স্টোরে অনেক মূল্যবান কাঁচামাল যেমন থাকে তেমনি অনেক সস্তা কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ন কাঁচামালও থাকে যার নিরাপত্তার ব্যাপারে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। সুনির্দিষ্ট অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত যাতে কেউ স্টোরে প্রবেশ না করে এবং কোন মালামালে হাত না দেয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রখাতে হবে।
উপসংহারঃ উল্লিখিত দৈনন্দিন কার্যাদি যদি একজন ষ্টোরকিপার সঠিকভাবে পালন করে তবে একদিকে যেমন নিজের ক্যারিয়ারের উন্নতি হবে অর্থাৎ ষ্টোর অফিসার হতে পারবে তেমনি টীম স্টোরেরও পারফরমেন্সও ভাল হবে। পাশাপাশি কোম্পানীর যে আল্টিমেট লক্ষ্য অপচয় রোধ করাও সম্ভব হবে।
১। কাঁচামাল গ্রহণ করাঃ একটি উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার কার্যাদেশ অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করতে বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল প্রয়োজন হয়। যেমন গার্মেন্টস তৈরী করতে প্রয়োজন হয়- কাপড়, সুতা, পলি, বিভিন্ন ধরনের লেভেল, জীপার, স্টীকার, ট্যাগ, কার্টুন সহ আর অনেক কাচামাল যা আবার বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সাপ্লায়ার সরবরাহ করে থাকে। এই সব সাপ্লাইয়ারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে সরবরাহকৃত মালামাল গ্রহণ করা একজন ষ্টোর কিপারের অন্যতম প্রধান কাজ।
২। কাঁচামাল সংরক্ষণঃ গ্রহণকৃত কাঁচামাল নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষন করে প্রয়োজনীয় অফিসিয়াল ডকুমেন্টস (চালান/ইনভয়েস/পেকিংলিস্ট) দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে বুঝিয়ে দিতে হবে এবং ফাইলে সংরক্ষণ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন ধরন বা রকমের মালামাল রাখার জন্য ভিন্ন ভিন্ন অথবা নির্ধারিত স্থান বা নির্দেশনা থাকে। মালামাল রাখার ক্ষেত্রে সেই নির্দেশনা অনুসরণ করেই মালামাল রাখতে হবে।
৩। Rearrangement/পুনঃসাজানোঃ বিভিন্ন কার্যাদেশের বিপরীতে আসা মালামাল ধীরে ধীরে ব্যবহার হতে থাকে এবং এরমধ্যে অন্য কার্যাদেশের মালামাল আসতে থাকে। এই অবস্থায় নতুন মালামাল রাখতে স্থান সংকুলান না হওয়া একটা নিত্য সমস্যা। এই সমস্যা নিরসনে যে সব মালামাল অধিকাংশ ব্যবহার হয়েছে তার পুনঃসাজানোর মাধ্যমে নতুন আগত মালামালের জন্য জায়গা তৈরী করতে হবে। একজন সচেতন স্টোরকিপার সপ্তাহে ২বার এই কাজটা করলে পরবর্তীতে আগত মালামাল রাখার সমস্যা অনেকাংশেই কমে যায়।
৪। কাঁচামাল ইস্যু/সরবরাহঃ নির্ধারিত কার্যাদেশের বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাঁচামাল সরবরাহ করা একজন স্টোরকিপারের নিয়মিত প্রধান কাজ। উৎপাদন বিভাগের পারফরমেন্স ঠিক রাখতে সঠিক সময়ে কাঁচামাল সরবরাহ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন ভাবেই এই সরবরাহের দেরী বা ত্রূটিযুক্ত মালামাল দেয়া যাবেনা।
৫। পুনঃগ্রহণঃ নির্ধারিত কার্যাদেশের বিপরীতে সরবরাহকৃত মালামাল অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন শেষে কিছু পরিমান অবশিষ্ট থাকে। এই বেঁচে যাওয়া মালামাল পুনঃগ্রহণ করে তা নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ন। অনেক ক্ষেত্রে বেঁচে যাওয়া মালামাল পরবর্তী কার্যাদেশেও কাজে লাগানো যায় যাতে করে কোম্পানী আর্থিকভাবে লাভবান হবে। তাই কোন অর্ডার শিপমেন্ট যাওয়ার পরেই উক্ত অর্ডারের বিপরীতে গৃহীত ও সরবরাহকৃত মালামালের হিসাব করে তা দায়িত্বপাপ্ত অফিসারকে জানানো দরকার।
৬। ডকুমেন্ট সংরক্ষণঃ বিভিন্ন সাপ্লাইয়ার কর্তৃক সরবরাহকৃত মালামালের চালান/পেকিংলিস্ট এবং উৎপাদন বিভাগে সরবারহকৃত ডেলিভারী স্লিপ/চাহিদাপত্র ইত্যাদি নির্দিষ্ট ফাইলে সংরক্ষণ করতে হবে।
৭। ট্রিমস কার্ড তৈরীঃ নির্ধারিত কার্যাদেশ বা অর্ডারের বিপরীতে গ্রহণকৃত মালামালের সেম্পল সংগ্রহ করে একটি নির্ধারিত শিট বা ফাইলে সুনির্ধিষ্টভাবে সাজিয়ে তৈরী করতে হয়। এটি প্রয়োজনভেদে ৩-৬ কপি পর্যন্ত দরকার হতে পারে যা দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্চেন্ডাইজার কর্তৃক অনুমোদন করে নেয়া।
৮। বিবিধঃ উল্লিখিত কাজ ছাড়াও একজন স্টোরকিপারকে ছোট খাট কিছু বিবিধ কাজ করতে হয় যা ঊর্ধ্বতন অফিসার কর্তৃক অর্পিত হয়। যেমন চালান লেখা, গেটপাশ লেখা, শিপমেন্টে সহযোগিতা করা, ইলাস্টিক, জীপার ওয়াশ ইত্যাদি।
৯। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ বিভিন্ন রকমের কাঁচালাম থাকা, রাখা ও সরবরাহের কারণে স্টোরে তুলনামূলকভাবে আবর্জনা বেশী হয়। তাই পরিচ্ছন্নকর্মীর সহযোগিতায় ষ্টোর সবসময় যাতে পরিস্কার থাকে তা একজন স্টোরকিপারকে নিশ্চিত করতে হবে।
১০। নিরাপত্তাঃ স্টোরে অনেক মূল্যবান কাঁচামাল যেমন থাকে তেমনি অনেক সস্তা কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ন কাঁচামালও থাকে যার নিরাপত্তার ব্যাপারে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। সুনির্দিষ্ট অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত যাতে কেউ স্টোরে প্রবেশ না করে এবং কোন মালামালে হাত না দেয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রখাতে হবে।
উপসংহারঃ উল্লিখিত দৈনন্দিন কার্যাদি যদি একজন ষ্টোরকিপার সঠিকভাবে পালন করে তবে একদিকে যেমন নিজের ক্যারিয়ারের উন্নতি হবে অর্থাৎ ষ্টোর অফিসার হতে পারবে তেমনি টীম স্টোরেরও পারফরমেন্সও ভাল হবে। পাশাপাশি কোম্পানীর যে আল্টিমেট লক্ষ্য অপচয় রোধ করাও সম্ভব হবে।
লেখকঃ জসীম উদ্দীন, ডিজিএম-স্টোর, টেক্সইউরোপ (বিডি) লিঃ
0 Comments