বাংলাদেশ শ্রম আইনের অধীনে শ্রমিকের যে সব কাজ অসদাচরণের পর্যায়ে পড়ে এবং যার জন্য চাকরিতে শাস্তি পেতে পারে।

অনেক সময় প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক বিভিন্ন ধরনের অপরাধ মূলক কাজ করে থাকে যা শ্রম আইন অনুসারে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করা হয়।যার ফলে একজন শ্রমিক বিভিন্ন ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হয়। কি কি অসদাচরণের জন্য একজন শ্রমিক শাস্তি পেতে পারে তা শ্রম আইনের ২৩ ধারায় বলা হয়েছে।

২৩। (১) এই আইনে লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ এবং চাকুরীর অবসান সম্পর্কে অন্যত্র যাহা কিছুই বলা হউক না কেন, কোন শ্রমিককে বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরীতে চাকুরী হইতে বরখাস্ত করা যাইবে, যদি তিনি-

(ক) কোন ফৌজদারী অপরাধের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত হন।
(খ) অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।

নিম্নলিখিত কাজ করা অসদাচরণ বলিয়া গণ্য হইবে, যথাঃ-

(ক) উপরস্থের কোন আইনসংগত বা যুক্তিসংগত আদেশ মানার ক্ষেত্রে এককভাবে বা অন্যের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হইয়া ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা;

(খ) মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, আত্মসাৎ,প্রতারণা বা অসাধুতা;

(গ) মালিকের অধীন তাঁহার বা অন্য কোন শ্রমিকের চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে ঘুষ গ্রহণ বা প্রদান;

(ঘ) বিনা ছুটিতে অভ্যাসগত অনুপস্থিতি অথবা ছুটি না নিয়া এক সঙ্গে দশ দিনের অধিক সময় অনুপস্থিতি;

(ঙ) অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিতি;

(চ) প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য কোন আইন, বিধি বা প্রবিধানের অভ্যাসগত লঙ্ঘন;

 (ছ) প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখলতা, দাংগা-হাংগামা, অগ্নিসংযোগ বা ভাংচুর;]

(জ) কাজে-কর্মে অভ্যাসগত গাফিলতি;

(ঝ) প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকুরী সংক্রান্ত, শৃঙ্খলা বা আচরণসহ, যে কোন বিধির অভ্যাসগত লঙ্ঘন;

(ঞ) মালিকের অফিসিয়াল রেকর্ডের রদবদল, জালকরণ, অন্যায় পরিবর্তন, উহার ক্ষতিকরণ বা উহা হারাইয়া ফেলা।

(৫) উপ-ধারা (১) (ক) এর অধীন বরখাস্তকৃত কোন শ্রমিক যদি আপীলে খালাস পান, তাহা হইলে তাহাকে তাহার পূর্বতন পদে বহাল করিতে হইবে, অথবা নূতন কোন উপযুক্ত পদে তাহাকে নিয়োগ করিতে হইবে, এবং যদি ইহার কোনটিই সম্ভব না হয়, তাহা হইলে তাহাকে ডিসচার্জকৃত কোন শ্রমিককে প্রদেয় ক্ষতিপূরণের সমান হারে ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে, তবে বরখাস্ত হওয়ার কারণে ইতিমধ্যে প্রাপ্ত ক্ষতিপূরণের টাকা ইহা হইতে বাদ যাইবে।

বিকল্প শাস্তি:-
অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কোন শ্রমিককে উপ-ধারা (১) এর অধীন চাকুরী হইতে বরখাস্তের পরিবর্তে, বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, নিম্নলিখিত যে কোন শাস্তি প্রদান করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) অপসারণ;

(খ) নীচের পদে, গ্রেডে বা বেতন স্কেলে অনধিক এক বৎসর পর্যন্ত আনয়ন;

(গ) অনধিক এক বৎসরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ;

(ঘ) অনধিক এক বৎসরের জন্য মজুরী বৃদ্ধি বন্ধ;

(ঙ) জরিমানা;

(চ) অনধিক সাত দিন পর্যন্ত বিনা মজুরীতে বা বিনা খোরাকীতে সাময়িক বরখাস্ত;

(ছ) ভর্ৎসনা ও সতর্কীকরণ।

মোঃ কামাল হোসেন,
 সহকারী ব্যবস্থাপক (আইন) বিজিডিসিএল, কুমিল্লা।

শুধু মাত্র ৪ এর খ ও ছ এ বরনিত অসদাচরণের জন্য কোন খতিপূরন পাবে না। আর ফৌজদারি অসদাচরণ এর জন্য এবং খ ও ছ এ বরনিত অসদাচরণ প্রমাণিত হলে বিনা নোটিশে অথবা নোটিশ এর পরিবর্তে বিনা মজুরিতে বরখাস্ত করা যাবে এবং খতিপূরণ ও পাবে না কিন্তু বেতন বা অন্য পাওনা পাবে।

Post a Comment

0 Comments