:::প্রভিডেন্ট ফান্ডে মালিকের অংশ কর্মী কখন নিয়ে যেতে পারেন:::
বাংলাদেশ শ্রম আইনের বিধি-২৬৩(১) অনুযায়ী যদি কোন কর্মীর চাকুরীর বয়স ২ বছর হয় তাহলে তাহার জমা অর্থ এবং মালিকের অংশসহ প্রাপ্ত হইবেন।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের বিধি-২৬৩(৩) কোন সদস্যের চাকরির মেয়াদ ২ বছর কম হলে অথবা তহবিলের সদস্য হিসাবে ১ বছর কম হইলে তাহার জমা অর্থ কেবল প্রাপ্ত হইবেন।
কোন কর্মী চাকুরীকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করলে তাহার চাকুরীর মেয়াদ যাই হোক না কেন, তাহার পোষ্যগণ তাহার এবং মালিকের অংশ সম্পূর্ণ পাইবার অধিকারী হইবেন।
:::প্রভিডেন্ট ফান্ডের পরিবর্তে অন্য কোন কর্মী কল্যাণ ফান্ড গঠন করা যাবে কি না:::
মালিক প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন না করে কর্মী কল্যাণ ফান্ডের নামে ফান্ড গঠন করে বেতন থেকে টাকা কাটা যাবে। এটা বৈধ কি না?
না, এটা বৈধ না কারণ টা কি?
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা- ১২৫ অনুযায়ী বলা হয়েছে একজন কর্মীর বেতন থেকে মালিক কি কি কারনে বেতন কর্তন করিতে পারিবেন।
ধারা- ১২৫ এর (ঝ)(ট) অনুযায়ী ফান্ডের জন্য টাকা কর্তন করা যাবে কিন্তু ধারা- ১২৫(ঝ) অনুযায়ী সরকার কর্তৃক অনুমোদিত প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য।
এছাড়াও ধারা- ১২৫ এর (ট) অনুযায়ী পরিবারের সদস্যদের কল্যাণের জন্য সরকারের অনুমোদন অনুযায়ী মালিক কোন তহবিল গঠন করতে পারবে এবং সরকার আজকে পর্যন্তু কোন প্রতিষ্ঠানকে ১২৫(ট) ধারা অনুযায়ী কোন তহবিল গঠনের অনুমতি প্রদান করেননি।
তাহলে এই ধরনের বে-আইনি তহবিল গঠনের জন্য এবং কর্মীর নিকট থেকে বে-আইনি ভাবে টাকা কর্তনের জন্য ধারা-১৩২ অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থার সম্মুখিন হতে হবে।
তাই প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান যদি চায় তার কর্মীর কল্যাণ করতে। তবে তাদেরকে প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করতে হবে সরকারের অনুমোদন নিয়ে। অন্য কোন ফান্ড চালু করে টাকা কর্তন করলে তাহা অবৈধ হবে।
:::আপনি কি জানেন কোন প্রতিষ্ঠানে প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করার পূর্বে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে? :::
১. জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
২. রেজিস্টার অফিস।
৩. কল কারখানা অধিদপ্তর।
উক্ত তিনটি প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে অনুমোদন গ্রহণ না করিলে প্রভিডেন্ট ফান্ডটি বে-আইনি বলে বিবেচিত হবে।
:::কিভাবে প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্যপদ বাতিল করবেন:::
একজন কর্মী যেকোন সময়ে তার সদস্যপদ বাতিল করার জন্য বোর্ডের কাছে আবেদন করতে পারেন এবং অবশ্যই আবেদনটি লিখিতভাবে করতে হবে।
প্রশ্ন হল কর্মী সদস্যপদ বাতিল করলে তিনি প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা পাবেন কি না;
অবশ্যই পাবেন তবে মালিকের অংশের টাকা পেতে হলে দুটি শর্ত পূরণ করতে হবে আর তা হল;
১. চাকুরীর বয়স ২ বছর হতে হবে অথবা
২. প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্য পদের মেয়াদ ১ বছর হতে হবে।
উক্ত দুটি শর্ত পূরণ না করলে কর্মী মালিকের জমাকৃত অংশ পাবেন না।
:::প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য বেতন থেকে কি পরিমান অর্থ কর্তন করা যাবে:::
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৬৪(৯) ধারা অনুযায়ী একজন কর্মীর মূল বেতনের নূন্যতম ৭% এবং সর্বোচ্চ ৮% টাকা প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য কর্তন করা যাবে।
আরও উল্লেখ্য যে, কর্মী যে পরিমান অর্থ ফান্ডে জমা রাখবেন মালিক ঠিক সেই সমপরিমান অর্থ ফান্ডে জমা করবেন
★ কিন্তু প্রশ্ন হল মালিক কখন থেকে অর্থ জমা প্রদান করা শুরু করবেন?
উত্তরটা হল ঠিক যে দিন থেকে কর্মী টাকা জমা দেয়া শুরু করবেন, ঠিক সেইদিন থেকে মালিক উক্ত ফান্ডে টাকা জমা শুরু করবেন।
:::একজন কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্য কখন হতে পারেন:::
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৬৪(৯) ধারা প্রতিষ্ঠানে যদি প্রভিডেন্ট ফান্ডের ব্যবস্থা চালু থাকে, তবে একজন কর্মী ১ বছর চাকুরীর বয়স পূর্ণকরার পর প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্য পদ অর্জন করতে পারবেন।
:::প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করা কি মালিকের জন্য বাধ্যতামূলক:::
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা ২৬৪ (১০) অনুযায়ী যদি প্রতিষ্ঠানের ৪ ভাগের ৩ অংশ কর্মী মালিকের নিকট লিখিতভাবে এই ফান্ড গঠনের জন্য আবেদন করেন,
তাহলে মালিকে বাধ্যতামূলকভাবে প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করতে হবে। অন্যথায়, প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করা মালিকে জন্য বাধ্যতামূলক নয়।
:::প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকার জন্য কর দিতে হয় কি না:::
বাংলাদেশ শ্রম আইনের অধীন গঠিত কোন প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থের জন্য কর প্রদান করতে হয় না তবে এই করমুক্ত সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানে প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠনের পরে উক্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডটি বাংলাদেশ আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর অধীন রেজিস্টার করে নিতে হবে অন্যথায় প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমাকৃত অর্থের জন্য কর প্রদান বাধ্যতামূলক।
:::প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে নেয়া ঋণে সুদ দিতে হবে কি:::
আপনি চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারেন যে সুদ দিতে হবে কারণ বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালার বিধি-২৬৬ (৪) অনুযায়ী সুদ দিতে হবে।
কিন্তু সুদ শতকরা কত টাকা দিতে হবে। একটা ভাল এবং খুশির খবর হল এই যে আপনাকে শতকরা হিসাব কোন সুদ দিতে হবে না।
তাহলে সুদ কিভাবে নিধারিত হবে?
সুমন ১০০০০ টাকা ঋণ নিলেন এবার তিনি জানালেন যে তিনি ১০ টি কিস্তিতে সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দিবেন।
তাহলে ১০০০০/১০=১০০০ টাকা।
এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হল যে কর্মীকে কিস্তি দিতে হবে ১১টা কারণ মোট কিস্তির উপরে যে একটি কিস্তি বেশি দেয়া হবে সেটাই হল "সুদ"।
তবে লক্ষ্য করার বিষয় হল যে কিস্তির পরিমান যত বাড়বে সুদের পরিমান কমবে এবং ঋনের টাকা সর্বোচ্চ ৬০টি কিস্তিতে দেয়া যাবে।
তবে ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে কোন কর্মীর মূল বেতনের এক তৃতীয় অংশের বেশি প্রতি মাসে কর্তন করা যাবে না।
0 Comments