গার্মেন্টস শিল্প কারাখানা ভাড়ার চুক্তিপত্র করার নিয়মাবলী



গার্মেন্টস শিল্প কারাখানা ভাড়ার চুক্তিপত্র করার নিয়মাবলী

শিল্প কারখানার জন্য মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে যে চুক্তিপত্র হয়, সে সম্পর্কে উভয়ের স্বচ্ছ ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়। আর সেজন্য চুক্তিপত্রের একটা নমুনা তুলে ধরা হলোঃ-

শিল্প কারাখানা ভাড়ার চুক্তিপত্রঃ
জনাব শাহাদৎ হোসেন, পিতা: কামরুল হোসেন, মাতা- হোসনেয়ারা বেগম, সাং-১২নং পল্টন লাইন, থানা-পল্টন, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর: ১৯৭০…………….২৬৭. পেশা-ব্যবসা, ধর্ম-ইসলাম, জাতীয়তা-জন্মসূত্রে বাংলাদেশী (যাতে প্রয়োজনে আইনগত প্রতিনিধি/উত্তরাধিকারীগণ অন্তর্ভূক্ত হবেন)।

 প্রথম পক্ষ/ভূমির মালিক
মেসার্স এ আর সিস্টেম, পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব আরিফুর রহমান, পিতা: রাশেকুর রহমান, মাতা: কামরুন্নেসা, ৩৭ নয়া পল্টন, থানা-পল্টন, জেলা-ঢাকা, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর ১৯৭৫………………১৮৯, পেশা-ব্যবসা, ধর্ম-ইসলাম, জাতীয়তা-জন্মসূত্রে বাংলাদেশী।
                                                                  
দ্বিতীয় পক্ষ/ভাড়াটিয়া
পরম করুণাময় মহান সৃষ্টিকর্তার নাম স্মরণ করিয়া অত্র দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের বয়ান আরম্ভ করিলাম। যেহেতু ভূমি ও কমপ্লেক্সের মালিক ও দখলদার হিসেবে প্রথম পক্ষ ও তার প্রতিনিধি ১৩/২ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার “সানরাইজ প্লাজা” কমপ্লেক্সের নিষ্কন্টক ও একক দখলদার ও মালিক; এবং

যেহেতু প্রথম পক্ষ উক্ত কমপ্লেক্সের ৪র্থ ও ৫ম তলা যার আয়তন আনুমানিক ৩০০০ বর্গফুট এলাকা বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে ভাড়া দেয়ার প্রস্তাব করলে; এবং
যেহেতু দ্বিতীয় পক্ষ স্থানটি মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া নেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছে;
সেহেতু উভয় পক্ষ নিম্নোক্ত শর্তাবলীতে অদ্য ০১/০৮/০১৭ ইংরেজি তারিখে অস্থায়ী মাসিক ভাড়ানামা চুক্তি সম্পাদন করলেন।

সাধারণ সম্মত শর্তাবলী:

১। প্রতি বর্গফুট ১০ টাকা হিসেবে দুই ফ্লোর এর মোট ৩০০০ বর্গফুট মাসিক ভাড়া ৩০০০০/- (ত্রিশ 
হাজার) টাকা হবে। উল্লেখ্য যে, ভাড়াটিয়া কর্তৃক এক মাসের ভাড়া ৩০০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা অগ্রিম জামানত হিসেবে প্রদান করবেন।

২। দ্বিতীয় পক্ষ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উভয় তলার মোট ৩০০০ বর্গফুটে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী এবং তৎসংক্রান্ত অফিসাদি পরিচালনা করবেন।

৩। দ্বিতীয় পক্ষ নিয়মিত বিল পরিশোধ, সংরক্ষণ ও সংস্কার করতে বাধ্য থাকবেন। এখানে উল্লেখ থাকে যে, উক্ত সেবার বকেয়া বিল বা দাবির জন্য প্রথম পক্ষ কোনভাবে আইনানুগ বাধ্য থাকবে না।

৪। দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াকৃত স্থানের কোনরূপ ক্ষতিসাধন করবে না। যদি তিনি ক্ষতি সাধন করেন, তাহলে প্রথম পক্ষের বরাবরে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন। তেমনিভাবে প্রথম পক্ষ যদি দ্বিতীয় পক্ষের কোন ক্ষতি সাধন করেন, তাহলে দ্বিতীয় পক্ষ বরাবর ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন।

৫। এই চুক্তিনামা বলবৎ থাকাকালীন পক্ষগণের কেহ মৃত্যুমুখে পতিত হলে তাদের ওয়ারিশগণ বর্তমানে শর্তাধীনে নতুন চুক্তিনামা সম্পাদন করতে পারবেন অথবা বর্তমান চুক্তি দ্বারা বাধ্য থাকবেন।

৬। প্রথম পক্ষ বা মালিকের শর্তাবলী:

(ক) চুক্তিতে উল্লেখিত সময়সীমার মধ্যে ভাড়াটিয়া চুক্তিভুক্ত সকল অধিকার ভোগ করতে পারবে এবং এক্ষেত্রে প্রথম পক্ষ বা তার প্রতিনিধি অথবা অন্য কেউ কোনরূপ হস্তক্ষেপ করবে না বা করানো হবে না।

(খ) তফসিলভুক্ত কারাখানায় যে কোন প্রকার নিয়ন্ত্রণ বা অন্যান্য আইনগত প্রতিবিধানাদি থেকে মুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে প্রথম পক্ষ বা তার প্রতিনিধি প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন যাতে উহা কার্যকর অবস্থায় বহাল থাকে এবং উক্ত ব্যবস্থা কার্যকর করার ক্ষেত্রে, দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া কোন প্রকার হস্তক্ষেপ বা আইনানুগ বাধা নিষেধ প্রয়োগ করতে বা করাতে পারবেন না।

(গ) দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া এবং তার যে কোন প্রতিনিধি, অতিথি, ক্রেতা বা তাদের প্রতিনিধিগণ তফসিলভুক্ত কারাখানা কর্ম সময়ে ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টা অবাধে শান্তিপূর্ণ প্রবেশাধিকার রাখবেন। প্রয়োজনে কারখানাটি ২৪ ঘন্টা উৎপাদন কাজ চালু রাখবে এবং ইহাতে প্রথম পক্ষের কোন ওজর আপত্তি থাকবে না।

(ঘ) তফসিলভুক্ত কারাখানায় নির্ধারিত সময়ে ভাড়াটিয়া তার কারখানার জন্য সার্বক্ষণিক অর্থাৎ ২৪ ঘন্টার পাহারার জন্য নিজস্ব ব্যবহার, তত্ত্বাবধানে, নিয়ন্ত্রণে ও নিজ দায়িত্বে নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ দিতে পারবেন।

(ঙ) প্রথম পক্ষ পৌর কর ও খাজনা ইত্যাদি পরিশোধ করবেন।

৭। দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়ার শর্তাবলী:

(ক) ভাড়াটিয়া তথা দ্বিতীয় পক্ষ, প্রথম পক্ষকে এক মাসের ভাড়া ৩০০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা অগ্রিম জামানত হিসেবে প্রদান করলেন। দ্বিতীয় পক্ষ বিল্ডিংয়ের ৪র্থ ও ৫ম তলার সর্বমোট ৩০০০ (তিন হাজার) বর্গফুট জায়গার মাসিক ৩০০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, চলতি মাসের ভাড়া পরবর্তী মাসের ১০ (দশ) তারিখের মধ্যে অবশ্যই পরিশোধ করবেন এবং এক মাসের ভাড়া বকেয়া হলে এই চুক্তিপত্রটি বাতিল বলে গণ্য হবে এবং প্রথম পক্ষ ভাড়াটিয়াকে ১৫ দিনের নোটিশ দিয়ে উচ্ছেদ করতে পারবেন।

(খ) তফসিলভুক্ত ভাড়াকৃত স্থানটি কেবলমাত্র অত্র কোম্পানীর অফিস এবং কারখানার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে। দ্বিতীয় পক্ষ অঙ্গীকার করছে যে, অন্য কোন উদ্দেশ্যে স্থানটি ব্যবহার করবেন না।

(গ) দ্বিতীয় পক্ষ তফসিলের সম্পত্তিতে কোনরূপ বেআইনী ব্যবসা পরিচালনা করবেন না। যদি কোন বেআইনী কার্যকলাপ করেন তাহলে প্রথম পক্ষ থানায় নালিশ করত: বিনা নোটিশে দ্বিতীয় পক্ষকে উচ্ছেদ করতে পারবেন।

(ঘ) দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়ার স্মারক সংঘ বা উদ্দেশ্যাবলীর কোন শর্ত বর্তমান বা ভবিষ্যতে অত্র চুক্তিনামার কোন শর্ত বা অঙ্গীকারকে বাতিল, খারিজ বা পরিপন্থী হিসেবে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন না।

(ঙ) দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া, ভাড়াকৃত স্থানের ছাদ, দেয়াল, জানালা, টয়লেট, বাথরুম, পানির লাইন ইত্যাদি স্থানের প্রথম পক্ষের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করবেন এবং টয়লেট, বাথরুম, পাইপ লাইনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে অনতিবিলম্বে এবং তৎক্ষণাৎ মেরামত করবেন। দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া ভাড়াকৃত স্থানের বাইরে বারান্দা, সিঁড়ি বা অন্য কোন স্থানে মালামাল রেখে কোনভাবেই পরিবেশ নষ্ট বা দূষিত করতে পারবেন না।

(চ) দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া ভাড়াকৃত ভবনের মূল অবকাঠামোর কোন প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন, খনন, ভাংচুর করতে পারবেন না। অবশ্য ব্যবসায়িক প্রয়োজনে দ্বিতীয় পক্ষ আভ্যন্তরীণ কাঠামোর পরিবর্তন করতে পারবেন।

৮। প্রথম পক্ষ ওয়াসার পানি সরবরাহ করবেন। অবশ্য অবস্থার প্রেক্ষিতে ওয়াসার পানি সরবরাহ বন্ধ থাকলে দ্বিতীয় পক্ষ গভীর নলকূপ বা অন্য কোন উপায়ে প্রথম পক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে পানির ব্যবস্থা করতে পারবেন এবং এর খরচ দ্বিতীয় পক্ষ বহন করবে।

৯। দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া প্রথম পক্ষের অনুমতি ব্যতীত ভাড়াকৃত কারখানা অথবা তাহার অংশ বিশেষ কোন ব্যক্তির নিকট দখলী স্বত্ব হস্তান্তর করতে পারবেন না। অর্থাৎ কোনরূপ সাবলেট দিতে পারবেন না।

১০। বর্তমান চুক্তিনামার মেয়াদ শেষান্তে উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে নির্ধারিত শর্তাবলীর প্রেক্ষিতে যুক্তিসঙ্গত সময়ে মধ্যে বাজারের চলমান ভাড়ার সাথে সঙ্গতি রেখে নতুন ভাড়ার শর্তাবলী সাপেক্ষে অত্র চুক্তিনামা নবায়ন করা যাবে। যদি দ্বিতীয় পক্ষ চুক্তি পত্র নবায়ন করতে ইচ্ছুক না হন, তা হলে চুক্তির মেয়াদ শেষে দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া তাদের মেশিনারীজ, সরঞ্জামাদি সরিয়ে নিতে বাধ্য থাকবেন।

১১। চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণের পূর্বে দ্বিতীয় পক্ষে যদি কোন কারণে ঘর ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে দ্বিতীয় পক্ষ নিজ ব্যয়ে যে সমস্ত আভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করেছিল (পাকা কাজ ব্যতীত) তা ঘর ছেড়ে দেয়ার সময় দ্বিতীয় পক্ষ নিয়ে যেতে পারবেন। ইহাতে প্রথম পক্ষের কোন ওজর আপত্তি থাকবে না।

১২। প্রথম পক্ষ দ্বিতীয় পক্ষের চাহিদা মোতাবেক ৪র্থ তলার দক্ষিণ পাশের ১০০০ বর্গফুট স্থানে টাইলস দিয়ে আচ্ছাদন করে দিবেন এবং ইহার খরচ প্রথম পক্ষ বহন করবেন।

১৩। চুক্তিভুক্ত ফ্লোরে অবস্থিত কারখানা ও অফিসের জন্য বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদি সংযোগের জন্য দ্বিতীয় পক্ষকে প্রয়োজনীয় দলিল পত্রাদির কপি সরবরাহ করাসহ যাবতীয় সহযোগিতা প্রদান করবেন। তবে এরূপ সংযোগের যাবতীয় ব্যয় দ্বিতীয় পক্ষ বহন করবেন।

১৪। দ্বিতীয় পক্ষ ভাড়াটিয়া কোনভাবেই তফসিলোক্ত স্থানে কোন প্রতিষ্ঠান, কাস্টমস বা ব্যাংকের নিকট দায়বদ্ধ করতে পারবেন না। কোন কারণে তার ব্যবসা বন্ধ হলে তফসিলোক্ত গৃহ প্রথম পক্ষের বরাবরে বুঝিয়ে দিতে বাধ্য থাকবেন।

তফসিলঃ-
তেজগাঁও ১৩/২ হোল্ডিংস্থ সানরাইজ প্লাজার ৪র্থ ও ৫ম তলার সর্বমোট ৩০০০ (তিন হাজার) বর্গফুট, অবস্থান: ১৩/২ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা, চৌহদ্দি: উত্তরে ১৩/১, দক্ষিণে ১৩/৩, পূর্বে মসজিদ এবং পশ্চিমে তেজগাঁও ৩নং রাস্তা।

এতদ্বার্থে সুস্থ মস্তিস্কে, সেচ্ছায়, সজ্ঞানে এবং কারো বিনা প্ররোচনায় অত্র অস্থায়ী ভাড়ার চুক্তিপত্রটি এবং উহার শর্তসমূহ পড়ে এবং পড়িয়ে এবং ইহার মর্ম সম্যখ অবগত হয়ে পক্ষগণ অত্র চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করে চুক্তিপত্রটি সম্পাদন করলেন।

স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর :        
১।                                             
১। প্রথম পক্ষ/মালিকের স্বাক্ষর : 
২।                                             
৩।                                            
২। দ্বিতীয় পক্ষ/ভাড়াটিয়ার স্বাক্ষর:

Post a Comment

0 Comments