⛔ ৮ ঘন্টা কাজ করানো কিন্তু ১ ঘন্টা আহার এবং বিশ্রামের বিরতি প্রদান না করা:::ইপিজেডের জন্য
অনেক প্রতিষ্ঠানে একটা রেওয়াজ চালু আছে, প্রতিদিন কর্মীকে ৮ ঘন্টা কাজ করাবে কিন্তু ৩০ মিনিট আহার এবং বিশ্রামের সময় প্রদান করে।
কিন্তু বাকি ৩০ মিনিট বিরতি প্রদান না করে, ৩০ মিনিট পূর্বেই প্রতিষ্ঠানে ছুটি প্রদান করেন।
অথাৎ ৮ : ৩০ মিনিট পরে অফিস ছুটি দিয়ে দেয়া হয় এবং শ্রমিকদের বলা হয় বাকি ৩০ মিনিট বিরতি বাসায় ভোগ করার জন্য।
উক্ত ধরনের কার্যক্রম বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনে ধারা-৩৯ অনুযায়ী বে-আইনী।
কারন কি?
ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-৩৯(ক) এবং (খ) অনুযায়ী বিরতি প্রদান না করা।
ধারা-৩৯(ক) অনুযায়ী:
এক টানা ৬ ঘন্টা কাজ করালে ১ ঘন্টা বিরতি প্রদান করতে হবে।
এখানে লক্ষ্য করেন প্রতিটি কর্মীকে ৬ ঘন্টা কাজ করানোর পরে ৩০ মিনিট বিরতি দেয়া হচ্ছে।
ধারা-৩৯ অনুযায়ী কোন কর্মী ৫ এবং ৬ ঘন্টা অধিক সময় কোন কর্মী কাজ করতে
বাধ্য থাকিবে না যদি ৫ ঘন্টা কাজ করার পরে ৩০ মিনিট এবং ৬ ঘন্টা কাজ করার
পরে ১ ঘন্টা বিরতি না দিলে।
কোন প্রতিষ্ঠান আবার আইনকে ফাকি দেয়ার জন্য ৫ ঘন্টা কাজ করার পরে ৩০ মিনিট
বিরতি দেন কিন্তু মোট ৬ ঘন্টা ৩০ হওয়ার পরে বাকী ৩০ মিনিট বিরতি আর দেয়া হয়
না।
যাহা ধারা-৩৯ অনুযায়ী স্পষ্ট অপরাধ, কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মী মোট ৬ ঘন্টা
করার পর মোট ১ ঘন্টা বিরতি না পেলে তিনি আর কাজ করিতে বাধ্য থাকিবেন না।
⛔ ছুটি: ইপিজেডের জন্য
বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন শ্রম অধ্যাদেশ ২০১৯ এর ধারা-০৯,৩০,৪১,৪২,৫০,৫১,৫২ এবং ৫৩ অনুযায়ী ছুটি মোট আট প্রকার যথাঃ-
১। নৈমেত্তিক ছুটি
ইপিজেড অধ্যাদেশের ধারা-৫০ অনুযায়ী নৈমেত্তিক ছুটি হবে ১০ দিন এবং পূর্ন মজুরীতে একজন শ্রমিক এই ছুটি ভোগ করতে পারবেন।
২। অসুস্থতা ছুটি
ইপিজেড অধ্যাদেশের ধারা-৫১ অনুযায়ী অসুস্থতা ছুটি হবে ১৪ দিন এবং পূর্ন
বেতনে একজন শ্রমিক এই ছুটি ভোগ করতে পারবেন। পূর্বে শ্রমিক অর্ধেক বেতনে
উক্ত ছুটি ভোগ করতেন।
৩। অর্জিত ছুটি
প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য শ্রমিক একদিনের ছুটি পাবেন যা নগদায়ন করা যাবে কিন্তু নগদায়নের নিয়ম ইপিজেড কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দিবে।
৪। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি
ধারা-৪১ অনুযায়ী যদি কোন শ্রমিক সাপ্তাহিক ছুটি না পায় তবে ধারা-৪২ অনুযায়ী
পরর্বতী ৬ দিনের মধ্যে তাকে ক্ষতিপূরণমূলক সমপরিমান ছুটি দিতে হবে।
৫। মাতৃত্বকালীন ছুটি
মোট ১৬ সপ্তাহ ছুটি ভোগ করতে পারবেন একজন নারী শ্রমিক যদি তাহার দুটি সন্তান জীবিত না থাকে এবং চাকুরীর বয়স ৬ মাস হতে হবে।
৬। উৎসব ছুটি
ধারা-৫৩ অনুযায়ী কর্মী ১১ দিন উৎসব ছুটি ভোগ করিতে পারিবেন এবং কোন কারনে
কর্মীকে উৎসব ছুটির জন্য কাজ করাতে একদিনের জন্য দুইদিন মজুরীসহ ছুটি দিতে
হবে।
৭। সাপ্তাহিক ছুটি
ধারা- ৪১ অনুয়ায়ী শ্রমিক সপ্তাহে ১ দিন সাপ্তাহিক ছুটি পাইবেন এবং ইহার জন্য কর্মীকে মজুরী প্রদান করা হবে।
৮। সাধারন ছুটি
ইপিজেড শ্রম অধ্যাদেশ অনুযায়ী ইপিজেড কর্তৃপক্ষ ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানের জন্য সাধারন ছুটি ঘোষণা করতে পারবে।
⛔ মাতৃত্বকালীন ছুটিঃ ইপিজেডের জন্য
পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় শব্দগুলোর যদি একটা তালিকা করা হয় তবে আমার মনে হয়
"মা" শব্দটা তালিকার সবার উপরে থাকবে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে,আর অবশ্যই সেটার
কারন ব্যাখ্যা করার কোন মানে হয় না,যে "মা" শব্দটা পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয়
শব্দ কেন।
ঠিক একইভাবে একজন "মাকে" যদি আপনি বলেন যে আপনার জীবনের সৃষ্ট সময় কোনটা
সেই মা আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে দিবে আমি যেদিন মাতৃত্ববরন
করেছিলাম।
কিন্ত একটা মায়ের জন্য মাতৃত্ববরন করা খুব কষ্টের কারন হয়ে উঠে যখন সেই মা
হয় কর্মজীবি মা। যদিও বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনে যথেষ্ট পরিমানে চেষ্টা করা
হয়েছে, একজন নারীকে প্রসূতিকালীন সময়ে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য কিন্ত এটা
একজন সরকারি কর্মজীবি নারী সুবিধার তুলনায় অনেক কম মনে হয়।
এবার কথা হল মাতৃত্বকালীন ছুটি
★ কোন শ্রমিক পাবে?
★ছুটি কত দিন পাবে?
★কোন নারী পাবেন না?
★স্থায়ী শ্রমিক হতে হবে কি না?
এবং
★ প্রসূতি কল্যান সুবিধা পেতে হলে একজন নারীকে প্রতিষ্ঠানে কতদিন কাজ করতে হবে?
★ মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত যেকোন নারী শ্রমিক পাবে।অনেকে
বলেন অস্থায়ী নারী শ্রমিকরা পাবে না শুধু স্থায়ীরা পাবে কিন্ত ধারনাটা সঠিক
না কারন ধারা ৩০(১) বলা আছে যেঃ
"প্রত্যেক মহিলা শ্রমিক তাহার মালিকের নিকট হইতে তাহার সন্তান প্রসবের
সম্ভাব্য তারিখের অব্যবহিত পূর্ববতী আট সপ্তাহ এবং সন্তান প্রসবের অব্যবহিত
পরবর্তী আট সপ্তাহের জন্য প্রসূতি কল্যান সুবিধা পাইবার অধিকারী হইবেন"।
★কোন নারী পাবেন না?
আপনি একজন নারী,আপনি প্রতিষ্ঠানে ৬ মাস কাজ করেছেন কিন্ত তারপরও আপনি
প্রসূতিকালীন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন যদি আপনার দুটি সন্তান জীবিত
থাকে।
তার মানে কি আপনার তৃতীয় সন্তান জন্মের সময় আপনি কোন ছুটি পাবেন না।আপনি
যদি মহিলা হন তবে হতাশ হবেন না কারন আপনার জন্য ছুটি ব্যবস্থা আছে কিন্ত
*সেটা কত দিন?
*আর কি ভাবেই বা সেটা দেয়া হবে?
প্রথম কথা হল কতদিন উত্তরটা হল ১১২ দিন কিন্ত কেন ধারা ২৯(২) পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন তাই আর বর্ননা করলাম না।
ধারা ৩০(২) যে নারীর দুই বা ততোধিক সন্তান জীবিত থাকে সে প্রসূতি কল্যান
সুবিধা পাবে না তবে সে কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।
★ যদিও ইতিমধ্যে এটা উল্লেখ করা হয়েছে যে সন্তান প্রসবের ঠিক পূর্বে ৮
সপ্তাহ এবং ঠিক পরে ৮ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি পাইবেন এবং হিসাবটা হলঃ
(৮*৭)=৫৬ দিন।
(৫৬*২)=১১২ দিন।
আপনারা কেউ লক্ষ্য করেছেন কি না,যে মাতৃত্বকালীন ছুটির মধ্যে যদি অন্যকোন ছুটি থাকে তাহলে ইহা মাতৃত্বকালীন ছুটি হিসাবে গন্য হবে।
এখন প্রসূতি কল্যান সুবিধা অধ্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ধারা নিয়ে আমি আলোচনা করছি এবং আপনাদের একটু বিশেষ মনযোগ আশা করছি।
★ ★ প্রসূতি কল্যান সুবিধা পেতে হলে একজন নারীকে প্রতিষ্ঠানে কতদিন কাজ করতে হবে?
উত্তরটা খুব সোজা মাএ ৬ মাস কিন্ত আসল সমস্যাটা এখানে না,আসেন একটু গল্প করে সমস্যাটা বের করি।
সুমনা মারাত্মক সুন্দরী এক মহিলা,আপনারা অনেকে ভাবছেন সুন্দরী আবার
মারাত্মক হয় কিভাবে,হয় রে পাগলা হয়।এই সুমনাকে দেখার জন্য এলাকার কত ছেলের
যে গায়ের রং কালো হয়ে গেল রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতে থাকতে তার খবরকে রাখে।যাই
হোক সুমনা বিয়ে করল পরে একটা চাকুরীও নিল একটা মুঠো ফোন কোম্পানিতে ২০১৫
সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে,সুমনা তার মালিকে মে মাসের ৪ তারিখে জানাল
যে তার EDD (Expected Date of Delivery)সম্ভাব্য সন্তান প্রসাবের সময়
জুলাইয়ের ১ তারিখে।এখন সে মাতৃত্বকালীন ছুটি চায় কিন্ত মালিক তাকে বলেন যে
আপনার চাকুরীর বয়স মাএ ৪ মাস ৪ দিন,অতএব আপনি কোন ছুটি পাবেন না।
★ ৪ মাস ৪ দিন কাজ করে সুমনা কি আসলেই কোন মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবে না?
ক্লাসে হয়তো বা আমার মত অনেকে পেছনের বেঞ্চি থেকে বাঘের মত গর্জন দিয়ে
বলবেন না স্যার পাবেনা কিন্ত আশার কথা হল যে সুমনা সবকিছুই পাবে।
১৩(১) ধারার একটা লাইন তুলে দিয়ে তরজমা করলে হবে।
"তবে শর্ত থাকে যে,কোন মাহিলা উক্তরুপ সুবিধা পাইবেন না যদি না তাহার
মালিকের অধীন (তাহার সন্তান প্রসবের অব্যবহিত (ঠিক) পূর্বে অন্যুন ছয় মাস
কাজ করিয়া থাকেন)
Bracket এর মধ্যে পড়েন,তার মানে বলা হয়েছে সন্তান প্রসাবের ঠিক পূর্বে ৬ মাস কাজ করতে হবে।
এবার দেখি হিসাবটা কিভাবে হয়ঃ
জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে মে মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত ৪ মাস ৪ দিন প্লাস ৫৬ দিন মাতৃত্বকালীন ছুটি সব মিলিয়ে ৬ মাস হয়।
আমি জানি অনেকের মনের কোনে একটা প্রশ্ন উকি দিচ্ছে আর সেটা হল ৫৬ দিনতো মহিলা ছুটিতে থাকবে তবে এটা কিভাবে কর্মকালীন দিন হয়।
এবার চলেন ধারা ১৩ থেকে ঘুরে আসি,ধারা ১৩(১)(২)(ঘ) অনুসারন করলে আপনি বুঝতে
পারবেন কেন ছুটির দিনগুলোকে কর্মকালীন দিন হিসাবে গননা করা হবে।তারপরও আমি
কিছু লাইন তুলে দিলাম বোঝার জন্যঃ
১৩(২)"কোন শ্রমিকের বাস্তবে কাজ করার দিন গননার ক্ষেএে নিন্মলিখিত দিনগুলোও গননায় আনা হইবে, যথা-
ঘ)মহিলা শ্রমিকের ক্ষেএে,অনধিক ষোল সপ্তাহ পর্যন্ত প্রসূতি ছুটি।
উক্ত ধারার জন্যই সুমনার ছুটির দিনগুলোকে কর্মকালীন দিন হিসাবে গর্ননা করা হবে।
আমি আমার সেরাটা দিয়ে সুমনার কেসের প্যাঁচ খোলার চেষ্টা করেছি তবে জানিনা
আপনারা বুঝতে পরেছেন কি না তবে যদি আপনি বুঝতে না পারেন তবে তিন চার বার
পোড়লে নিশ্চিত বুঝতে পারবেন।
⛔ টার্মিনেশন (Termination): ইপিজেডের জন্য
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম অধ্যাদেশ ২০১৯ সবচেয়ে বহুল ব্যবহারিত ধারা হল ধারা-২২।
কোন মালিক কোন স্থায়ী বা অন্য কর্মীকে বিনা কারনে চাকুরী থেকে ধারা-২২ অনুযায়ী অব্যাহতি প্রদান করতে পারেন।
যেকোন স্থায়ী কর্মীকে টার্মিনেইট করার জন্য ১২০ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে অথবা ১২০ দিনের মূল মজুরী টাকা প্রদান করতে হবে।
অন্য কর্মীদের টার্মিনেইট করার জন্য ৬০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে অথবা ৬০ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে।
২২ ধারা অনুযায়ী কোন স্থায়ী কর্মীকে অব্যাহতি প্রদান করলে তাকে ২২(৩) ধারা
অনুযায়ী প্রতি বছর কাজের জন্য এক মাসের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে। যা
শুধুমাত্র একজন স্থায়ী কর্মী পাবেন এবং ইহা অন্য কর্মীর জন্য প্রযোজ্য নয়।
⛔ মাস্টার রোল কি: ইপিজেডের জন্য
মাস্টার রোল একটা সাধারন খাতা।
খাতাটির অসাধারন কিছু গুরুত্ব আছে।
ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-১৬ তে মাস্টার রোল নামক পদার্থের সাথে পরিচিত হবেন।
ইপিজেড শ্রম আইনের অধীন লে-অফ নামক যে বিষয়টি আছে তার সাথে মাস্টার রোল বিষয়টি বিস্তৃতভাবে জড়িত।
লক্ষ্য করে থাকবেন যে যখন কোন প্রতিষ্ঠান লে-অফ থাকে, তখন কিন্তু
প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মী বা রক্ষনাবেক্ষন বিভাগের কর্মীদেরকে সম্পদ
দেখাশোনার জন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কাজ করতে হয়।
ধারা-১৭ অনুযায়ী লে-অফ চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং লে-অফকালীন
সময়ে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের হাজিরা সংরক্ষনের জন্য যে খাতা সংরক্ষন
করা হয় তাকেই মাস্টার রোল বলে।
⛔ উৎসব বোনাস : ইপিজেডের জন্য
বাংলাদেশ শ্রম আইনের মত ইপিজেড শ্রম আইনে উৎসব বোনাসের ব্যবস্থা আছে।
ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-৫৩ অনুযায়ী একজন কর্মী স্থায়ী হলে উৎসব বোনাস পাবেন।
যেহেতু ইপিজেড শ্রম আইনে বলা আছে স্থায়ী কর্মীগন উৎসব বোনাস পাবেন, তার অর্থ হল যেহেতু কোন কর্মী ৩ মাসের মধ্যে স্থায়ী হওয়া সম্ভব,
তাই ইপিজেড শ্রম আইন অনুযায়ী ৩ মাস কাজ করেও উৎসব বোনাস পাওয়া যাবে।
প্রতি বছরে একজন কর্মী দুইবার তার নিজ ধর্মের অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে দুটি উৎসব বোনাস পাবেন।
বোনাসের পরিমান হবে বেসিকের সমান, কোন অবস্থাতেই এটা বেসিকের বেশি বা কম হবে না।
⛔ বাধ্যতামূলক গ্রুপ বীমা: ইপিজেডের জন্য
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ এর ধারা-৩৬ অনুযায়ী যদি কোন প্রতিষ্ঠানে ২৫
জন স্থায়ী কর্মী নিয়োজিত থাকেন তবে উক্ত প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক গ্রুপ
বীমা চালু করতে হবে।
গ্রুপ বীমা চালু করার পূর্বে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য করতে হবে।
১. গ্রুপ বীমার পরিমান কত টাকা হবে।
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনে বাধ্যতামূলকভাবে গ্রুপ বীমা চালু করার কথা বলা
হয়েছে কিন্তু কত টাকা ক্ষতিপূরণ বীমা থেকে পাওয়া যাবে তা নিদিষ্ট করা নেই।
এটা হতে পারে ১০,০০০/-, ৫০,০০০/- বা ১,০০,০০০/-, যে কোন পরিমান।
২. কোন বিষয়গুলো বীমার আওতায় আসবে।
মৃত্যু এবং স্থায়ী অক্ষমতার ক্ষেত্রে বীমার টাকা পরিশোধ করতে হবে।
স্থায়ী অক্ষমতা বলতে কি বুঝায়?
স্থায়ী অক্ষমতা বুঝাতে ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-২(৫৩) অনুসরণ করতে হবে।
ধারা-২(৫৩) তে বলা হয়েছে প্রথম তফসিলের ১০০% ক্ষতিপূরণ প্রদানকারী বিষয়গুলোকে শতভাগ স্থায়ী অক্ষমতা হিসাবে বিবেচিত হবে।
তাই নিন্মের ৬টি বিষয়কে বীমার আওতায় আনতে হবে স্থায়ী অক্ষমতা হিসাবে।
১. উভয় হাত হারানো বা উপরের অংশ হইতে কাটিয়া ফেলা।
২. এক হাত বা পা হারানো।
৩. উভয় চোখের দৃষ্টি শক্তি হারানো।
৪. উভয় পা বা উরু কাটিয়া ফেলা,এক পা বা উরু কাটিয়া ফেলা বা যেকোন পা হারানো।
৫. মুখাবয়বের মারাত্মক বিকৃতি।
৬. সম্পূর্ণ বধিরতা।
এছাড়াও মৃত্যু আলাদাভাবে এর সাথে যুক্ত হবে।
সর্বমোট সাতটি বিষয়কে বাধ্যতামূলক গ্রুপ বীমার আওতায় আনতে হবে।
⛔ মৃত্যুজনিত সুবিধা : ইপিজেডের জন্য
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম অধ্যাদেশ ২০১৯ এর ধারা-১৮ অনুযায়ী কোন কর্মীকে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ খুব ভাল ভাবে বুঝতে হলে আপনাকে চারটি জিনিস ভাল ভাবে লক্ষ্য করতে হবে।
১। কর্মীর চাকুরীর বয়স ১ বছরের বেশি হতে হবে।
২। চাকুরীরত থাকাকালীন অবস্থায় মৃত্যুবরন।
৩। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরন।
৪। কর্মকালীন দুর্ঘটনার কারনে পরর্বতীতে মৃত্যুবরন।
প্রথমত, আপনাকে বুঝতে হবে, কে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ পাবে এবং কে পাবে না?
যে ব্যক্তির চাকুরীর বয়স অবিচ্ছিন্নভাবে অন্তত ১ বছরের অধিকাল হয়েছে তিনিই
শ্রম অধ্যাদেশের ১৮ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী
হইবেন।
চাকুরীর বয়স যদি কোন কারনে ১ বছরের বেশি না হয়, কোন ভাবেই ১৮ ধারার ক্ষতিপূরণ পাবে না।
প্রথম শর্তপূরন হলে, আপনাকে অন্য তিনটি শর্ত বিবেচনায় আনতে হবে।
১। চাকুরীরত থাকা অবস্থায়।
চাকুরীরত ব্যপারটা কি আসলে?
আপনি একটা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন কিন্তু আপনি কর্মঘন্টার বাহিরে বা ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে যে কোন ভাবে মারা গেলে।
প্রতিবছর বা ছয় মাসের অধিক সময়ের কাজের জন্য ১ টি করে বেসিক পাবে আপনার পোষ্য।
২। কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরন।
আপনি একজন কর্মী কর্ম ঘন্টার মধ্যে কর্মস্থালে বা কর্মস্থলের বাহিরে অফিসের কাজে থাকা অবস্থায় যে কোন ভাবে মৃত্যুবরন করলে।
আপনার পোষ্যরা প্রতিবছর বা ছয় মাসের অধিক সময় কাজের জন্য ৪৫ দিন করে মজুরি পাবেন।
৩। কর্মকালীন দুর্ঘটনা কারনে পরর্বতীতে মৃত্যুবরন।
আপনি একজন কর্মী কাজ করতে গিয়ে আহত হলেন এবং পরর্বতীতে ১ বা ২ মাস পরে মারা গেলেন।
আপনার পোষ্য ৬ মাস বা ১ বছর কাজের জন্য ৪৫ দিন করে মজুরী পাবেন।
সবার শেষে আপনাকে লক্ষ্য করতে হবে এই লাইনটি
"এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকুরী হইতে অবসর গ্রহন করিলে যে অবসরজনিত সুবিধা প্রাপ্ত হইতেন, তাহার অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হইবে।"
তার অর্থ হল একজন মৃত শ্রমিকের পোষ্য ১৮ ধারার ক্ষতিপূরণ পাইবেন এবং তার
অতিরিক্ত হিসাবে শ্রম অধ্যাদেশের ধারা-২৪ অনুযায়ী প্রতিবছর কাজের জন্য ১টি
করে বেসিক পাইবেন।
⛔ অর্জিত ছুটি গণনা: ইপিজেডের জন্য
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-৫২ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানে কোন কর্মী
অবিচ্ছিন্নভাবে ১ বছর কাজের জন্য পরবর্তী বছরে অর্জিত ছুটি ভোগ করিতে
পারিবেন।
প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য ১ দিন হারে অর্জিত ছুটি ভোগ করিতে পারবেন।
ধারা-৫২ তে একটা বিষয় লক্ষ্য করতে হবে আর তা হল
"১৮ দিন কাজের জন্য ১ দিন"কথাটা হল কাজের জন্য।
অনেকে ৩৬৫ দিনকে ১৮ দিয়ে ভাগ দিয়ে অর্জিত ছুটির দিন বের করবেন এটা আইন
সম্মত নয় কারন আইনে বলা হয়েছে কাজের দিন গুলোকে ১৮ দিয়ে ভাগ করতে হবে।
তবে কেউ ইতিপূর্বে থেকে ৩৬৫ দিনকে ১৮ দিয়ে ভাগ করে সুবিধা প্রদান করে থাকলে ধারা-১৯২ অনুযায়ী তাহা বন্ধ করা যাবে না।
অর্জিত ছুটি মজুরীসহ হবে এবং ধারা-৫২(২) অনুযায়ী কোন পঞ্জিকা বছরে কোন কর্মী তার অর্জিত ছুটি নগদায়ন করিতে পারিবে।
অর্জিত ছুটি নগদায়নের পদ্ধতি বেপজা দ্বারা নির্ধারিত হবে।
কোন অর্জিত ছুটি জমানোর বিষয়ে ইতিপূর্বে ৩০ দিনের একটি সংখ্যার বিষয়ে বলা
ছিল এবং বর্তমান আইনে ছুটি জমানোর বিষয়ে কোন কিছুই নিদিষ্ট করে বলা হয়নি।
তবে কোন প্রতিষ্ঠান ইতিপূর্বে যদি ছুটি জমানোর সুবিধা প্রদান করে থাকেন তবে তাহা ধারা-১৯২ অনুযায়ী বন্ধ করা যাবে না।
যেহেতু ছুটি জমানোর সুবিধাটি অধিক সুবিধা প্রদান করে কর্মীকে তবে সেক্ষেত্রে কর্মী কি পরিমান ছুটি জমাতে পারবে তা বলা নেই।
তাই ঝামেলা এড়ানোর জন্য কর্মীকে ছুটি ভোগ করানো বা প্রতি বছরেরটা প্রত্যেক বছরে নগদায়ন করানো উচিত হবে।
⛔ ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি : ইপিজেডের জন্য
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন অনুযায়ী দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরনমূলক ছুটির কথা বলা আছে।
ইপিজেড শ্রম আইনের ৪১ ধারাতে বলা আছে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটির বিষয়ে।
কোন কর্মী যদি তার প্রাপ্য ১ দিন সাপ্তাহিক ছুটি থেকে বঞ্চিত হন তবে তাকে পরবর্তী ৬ দিনের মধ্যে ১ দিনের ছুটি প্রদান করতে হবে।
অন্য দিকে, ৫৩ ধারাতে উৎসব ছুটির বিষয়ে বলা আছে, উৎসব ছুটির দিনে কোন
কর্মীকে কাজ করতে বলা হলে তাকে মজুরীসহ ২ দিনের ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি প্রদান
করতে হবে।
তবে উৎসব ছুটির বিনিময়ে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
ইতিপূর্বে ইপিজেড নির্দেশিনাতে বলা ছিল, যদি কোন কর্মী ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি ভোগ না করে,
তাকে তার ছুটির বিনিময়ে অর্থ প্রদান করা হলে,উক্ত কর্মীকে ক্ষতিপূরণমূলক উৎসব ছুটি প্রদান প্রয়োজন হবে না।
কিন্তু ২০১৯ সালের ইপিজেড শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণমূলক ছুটির বিনিময়ে শুধু অর্থ প্রদান করলে তা বে-আইনি হবে।
মজুরী এবং ছুটি দুটিই প্রদান বাধ্যতামূলক, তাই ছুটির বিনিময়ে শুধু মাএ অর্থ প্রদান গ্রহনযোগ্য নয়।
⛔ নতুন কর্মী নিয়োগ প্রদানে করনীয় বিষয়গুলো : ইপিজেডের জন্য
প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কম বেশি নতুন কর্মী নিয়োগ প্রদান করা হয় এবং এই নতুন শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেএে কিছু একান্ত পালনীয় বিষয় রয়েছে।
১। নিয়োগপএ প্রদান:
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-৬ অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠান কোন কর্মীকে নিয়োগপএ ছাড়া নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন না।
প্রতিষ্ঠানের সাথে কর্মীর সম্পর্ক নির্ধারিত হবে কেবল মাএ নিয়োগ পএের মাধ্যমে অন্য কোন কিছুর মাধ্যমে নয়।
তাই নিয়োগপএ ছাড়া কোন কর্মীকে নিয়োগ প্রদান করা অবৈধ হবে।
২। পরিচয়পএ প্রদান:
নিয়োগপএের পরে অতি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হল পরিচয়পএ প্রদান।
ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-৬ অনুযায়ী পরিচয়পএ প্রদান বাধ্যতামূলক এবং উক্ত পরিচয়পএে কর্মীর ছবি যুক্ত থাকবে।
৩। সার্ভিস বহি প্রদান:
প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত শ্রমিকের জন্য মালিক তার নিজ খরচে ধারা-৭ অনুযায়ী সার্ভিস বহির ব্যবস্থা করিবেন।
সার্ভিস বুকের বহির মাপ এবং সংরক্ষণ পদ্ধতি কতৃপক্ষ দ্বারা নির্ধারিত হবে।
৪। শ্রমিক রেজিস্টারে নাম অন্তর্ভূক্তি:
প্রতিষ্ঠানে কোন কর্মী নিয়োগ করা হলে,ধারা-৮ অনুযায়ী তার নাম শ্রমিক রেজিস্টারে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
শ্রমিক রেজিস্টারে শ্রমিকের নাম অন্তর্ভূক্ত না করলে কর্মী নিয়োগ যথাযথ হবে না।
⛔ চাকুরীর বয়স গননার নিয়ম : ইপিজেডের জন্য
কোন কর্মীকে বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনের ২য় অধ্যায় অনুযায়ী কোন ক্ষতিপূরণ
বা সুবিধা প্রদানের ক্ষেএে উক্ত কর্মীর চাকুরীর বয়স গননা করা একটি
গুরুত্বপূর্ন বিষয়।
চাকুরীর বয়স গননার ক্ষেএে কিছু ভুল ধারনা আছে।
অনেকের ভুল ধারনা বাস্তবে ২৪০ দিন উপস্থিত থাকলেই তা ১ বছর হিসাবে গননা করা হবে।
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-১৩(১) এ বলা আছে
"কোন শ্রমিক কোন প্রতিষ্ঠানে পূর্ববর্তী (১২) বার পজ্ঞিকা মাসে বাস্তবে
অন্তত ২৪০ দিন বা ১২০ দিন কাজ করিয়া থাকেন,তা হলে তিনি যথাক্রমে ১ বছর বা ৬
মাস প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করিয়াছেন বলিয়া গন্য হবে"
এখানে দুটি শর্ত লক্ষ্য করতে হবে,
১। পূর্ববর্তী ১২ পুঞ্জিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তি XYZ কোম্পানিতে ৪ বছর ১০ মাস ২৫ দিন কাজ করেন।তারপরে তিনি ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে চাকুরী থেকে পদত্যাগ করে।
এখন প্রশ্ন হল ধারা ১৩ অনুযায়ী দিপ্তির চাকুরীর বয়স ৫ বছর হবে কি না?
উত্তর হল না।
কারন ধারা-১৩(১) অনুযায়ী দুটি শর্ত পূরন হতে হবে।
১। পূর্ববর্তী ১২ পুঞ্জিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তির ক্ষেএে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল।তিনি ২য় শর্তটি পূরন করেছে ২৪০ দিনে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু যে দিনে চাকুরী ছাড়ছেন।
তার ১২ পুঞ্জিকা মাস পূর্ন হয়নি।
অনেকে ভুল ধরতে চেষ্টা করবেন কিন্তু লক্ষ্য করুন যোগদানের তারিখ থেকে
যোগদানের তারিখ ১২ পুঞ্জিকা মাস হিসাব করে তার মধ্যে ২৪০ দিন কাজের দিন
হিসাব করুন।
তবে আর আমার কথাগুলো ভুল মনে হবে না।
অনেকের কাছে মনে হবে ৬ মাসের বেশি কাজ করলে এক বছর বিবেচনা করতে হবে, আইনে বলা আছে।
হ্যা,শুধুমাত্র তা ধারা-১৮ এর ক্ষেএে অন্য কোন ক্ষেএে না।
আর বাস্তবিক কাজের দিনের জন্য ধারা-১৩(২) এ উল্লেখিত দিনগুলোকে গননায় আনতে হবে।
⛔ কর্মীর চুড়ান্ত পাওনার নিষ্পত্তি :ইপিজেডের জন্য
যেকোন কর্মী চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণের কারনে অথবা মালিক কতৃক ছাঁটাই,ডিসচার্জ,অপসারণ,
বরখাস্ত অথবা শ্রমিক কতৃক অব্যাহতি গ্রহনের কারনে বা অন্য কোন কারনে যদি
কোন শ্রমিকের চাকুরীর ছেদ ঘটে সেক্ষেএে কর্মীদের চুড়ান্ত পাওনার নিষ্পত্তি
করতে হয়।
ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-৫৬ অনুযায়ী পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে যাবতীয় পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে।
কিন্তু ইপিজেড শ্রম আইন-২০১৯ এর ধারা-২৬ অনুযায়ী চাকুরী ছেদ ঘটিবার তারিখ
হইতে পরবর্তী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাপ্য মজুরী পরিশোধের বিষয়ে বলা হয়েছে।
এছাড়া ধারা-৫৬ তে আরও বলা হয়েছে যে ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য পাওনাদি চাকুরী ছেদ হইবার পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
কিন্তু মজুরী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে দেয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে খুব কম প্রতিষ্ঠান আছে যারা মজুরী ৭ কর্মদিবসের পরিশোধ করে থাকে।
⛔ বাধ্যতামূলক গ্রুপ বীমা : ইপিজেডের জন্য
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ এর ধারা-৩৬ অনুযায়ী যদি কোন প্রতিষ্ঠানে ২৫
জন স্থায়ী কর্মী নিয়োজিত থাকেন তবে উক্ত প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক গ্রুপ
বীমা চালু করতে হবে।
গ্রুপ বীমা চালু করার পূর্বে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য করতে হবে।
১. গ্রুপ বীমার পরিমান কত টাকা হবে।
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনে বাধ্যতামূলকভাবে গ্রুপ বীমা চালু করার কথা বলা
হয়েছে কিন্তু কত টাকা ক্ষতিপূরণ বীমা থেকে পাওয়া যাবে তা নিদিষ্ট করা নেই।
এটা হতে পারে ১০,০০০/-, ৫০,০০০/- বা ১,০০,০০০/-, যে কোন পরিমান।
২. কোন বিষয়গুলো বীমার আওতায় আসবে।
মৃত্যু এবং স্থায়ী অক্ষমতার ক্ষেত্রে বীমার টাকা পরিশোধ করতে হবে।
স্থায়ী অক্ষমতা বলতে কি বুঝায়?
স্থায়ী অক্ষমতা বুঝাতে ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-২(৫৩) অনুসরণ করতে হবে।
ধারা-২(৫৩) তে বলা হয়েছে প্রথম তফসিলের ১০০% ক্ষতিপূরণ প্রদানকারী বিষয়গুলোকে শতভাগ স্থায়ী অক্ষমতা হিসাবে বিবেচিত হবে।
তাই নিন্মের ৬টি বিষয়কে বীমার আওতায় আনতে হবে স্থায়ী অক্ষমতা হিসাবে।
১. উভয় হাত হারানো বা উপরের অংশ হইতে কাটিয়া ফেলা।
২. এক হাত বা পা হারানো।
৩. উভয় চোখের দৃষ্টি শক্তি হারানো।
৪. উভয় পা বা উরু কাটিয়া ফেলা,এক পা বা উরু কাটিয়া ফেলা বা যেকোন পা হারানো।
৫. মুখাবয়বের মারাত্মক বিকৃতি।
৬. সম্পূর্ণ বধিরতা।
এছাড়াও মৃত্যু আলাদাভাবে এর সাথে যুক্ত হবে।
সর্বমোট সাতটি বিষয়কে বাধ্যতামূলক গ্রুপ বীমার আওতায় আনতে হবে।
⛔ সার্ভিস বেনিফিট: ইপিজেডের জন্য
বেপজা নির্দেশনা অনুযায়ী ইপিজেডের মধ্যে কোন প্রকার সার্ভিস বেনিফিটের ব্যবস্থা ছিল না।
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ এর ধারা-২৩ (৪) অনুযায়ী সকল স্থায়ী শ্রমিকে সার্ভিস বেনিফিট প্রদান করতে হবে।
কেবল মাএ স্থায়ী শ্রমিকগন সার্ভিস বেনিফিট প্রাপ্য হবেন কিন্তু কোন অস্থায়ী শ্রমিক সার্ভিস বেনিফিট প্রাপ্য হবেন না।
কোন স্থায়ী শ্রমিক কোন প্রতিষ্ঠানে ৫ বছর বা বেশি এবং ১০ বছরের কম সময় কাজ
করলে প্রতি বছর কাজের জন্য ১৫ দিন করে মূল মজুরী প্রাপ্য হবেন।
এছাড়াও ১০ বছর বা বেশি সময় স্থায়ী ভাবে কাজ করলে প্রতিবছর কাজের জন্য ৩০ দিনের মূল মজুরী প্রাপ্য হবেন।
ইপিজেডের শ্রম আইনের নিয়ম অনুযায়ী গ্রাচুয়িটি প্রদানের কোন প্রকার ব্যবস্থা নেই।
আর যে সকল প্রতিষ্ঠানে গ্রাচুয়িটি চালু আছে তাদেরকে গ্রাচুয়িটি এবং সার্ভিস বেনিফিট দুটিই দিতে হবে আলাদাভাবে।
যেহেতু ২৩(৫) ধারাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৩ ধারাতে প্রাপ্ত সকল সুযোগ সুবিধা অন্যান্য সুযোগ সুবিধার অতিরিক্ত হবে।
⛔ কত ভাবে প্রতিষ্ঠানের সাথে কর্মীর সম্পর্ক ছিন্ন হতে পারে :ইপিজেডের জন্য
একটা প্রতিষ্টানের সাথে যখন কোন কর্মীর সম্পর্ক শুরু হয় সেটা খুব
সুন্দরভাবে হয় কিন্ত শেষটা কেমন হয় তা নিয়ে কেউ খুব একটা বেশি মাথা গামায়
না।
৭ ভাবে ইপিজেডের একজন কর্মীর সাথে প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক ছিন্ন হতে পারে:
১। "ছাটাই" শ্রম আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী একজন কর্মীকে ছাটাই করে এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে।
২।"ডিসচার্জ" শ্রম আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী একজন কর্মীকে অব্যাহত শারীরিক সমস্যার কারনে চাকুরী হতে ডিসচার্জ করতে পারেন।
৩। "বরখাস্ত" শ্রম আইনের ২১(১) ধারা অনুযায়ী অসাদচারনের কারনে যে কোন কর্মীকে বরখাস্ত যাবে।
৪।"টার্মিনেশন" শ্রম আইনের ২২ ধারা অনুযায়ী কোন কর্মীকে কোন কারন ব্যাখ্যা করা ছাড়া সরাসরি চাকুরী থেকে অব্যাহতি প্রদান করা সম্ভব।
৫।"পদত্যাগ" কোন কর্মী নিজ ইচ্ছায় ২৩ ধারা অনুযায়ী চাকুরী থেকে ইস্তফা প্রদান করতে পারেন।
৬। "অবসর" একজন কর্মী ৬০ বছর পূর্ন করার পরে চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করতে
হবে অথবা চাকুরীর বয়স ২৫ বছর পূর্ন করার পরে সেচ্ছায় চাকুরী থেকে অবসর
গ্রহন করতে পারবেন ৩০ দিনের পূর্ববতী নোটিশ প্রদান করে।
৭। "মৃত্যু" কোন কর্মীর মৃত্যুর ফলে ধারা-১৮ অনুযায়ী তার প্রতিষ্ঠানের সাথে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন হয়।
⛔ কর্মীকে অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করে তা কমানো যাবে কি না: ইপিজেডের জন্য
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-১৯২ অনুযায়ী কোন কর্মীকে ইতিপূর্বে প্রদত্ত অধিক কোন সুবিধা কমানো যাবে না।
ধারা-১৯২ এ বলা আছে "এই আইন প্রবর্তনের সময় কোন শ্রমিক যে মালিকের অধীন যে
সকল অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করিতেছিলেন সেই মালিকের অধীন যতদিন কর্মরত
থাকিবেন ততদিন সেই সকল অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করিবেন,যদি না তাহার
উক্ত অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা এই আইন বা তদধীন প্রনীত বিধি বা প্রবিধানের
অধীন প্রদত্ত অধিকার ও সুযোগ সুবিধা হইতে অধিকতর অনুকূল হয়।"
উক্ত ধারাতে স্পষ্ট করে বলা আছে যে কোন বর্তমান কর্মীর অধিক সুযোগ-সুবিধা কমানো যাবে না।
অনেক প্রতিষ্ঠান প্রায়ই সুবিধা কমিয়ে দিয়ে থাকেন।উক্ত ক্ষেএে কর্মী আদালতে অভিযোগ করতে পারবে।
⛔ কর্মী মারা গেলে কেন অবসর সুবিধা পাবেন
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ এবং বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১৮ এবং
১৯ অনুযায়ী যদি কোন কর্মী মারা যায় তবে তার পোষ্যগন মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরনের
অতিরিক্ত হিসাবে অবসর সুবিধা পেয়ে থাকেন।
কারন কি?
ইপিজেড শ্রম আইনে কোন মালিকের সাথে শ্রমিকের সম্পর্ক বিছিন্ন হতে পারে ৭ ভাবে এবং বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী হতে পারে ৯ ভাবে।
মৃত্যু তার মধ্যে একটি,কোন কর্মী মারা গেলে তার সাথে প্রতিষ্ঠানের সাথে
সম্পর্ক ছিন্ন হয় অবসর হিসাবে কারন মৃত্যুর পরে কোন কর্মী আর কাজ করতে পারে
না।
উক্ত কারনে একজন কর্মী মৃত্যুর পরে অবসর সুবিধা পেয়ে থাকেন।
কি পরিমাণ অর্থ পাবেন?
ইপিজেড শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতি বছর কাজের জন্য পাবেন ৪৫ দিনের মূল মজুরী
এবং বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতি বছর কাজের জন্য পাবেন ৩০ দিনের মজুরী।
আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে প্রতি বছর কাজের জন্য বিষয়টি এমন নয় যে অবসর
সুবিধা পেতে হলে নিজের বয়স ৬০ বছর হতে হবে বা চাকুরী বয়স ২৫ বছর হতে হবে।
একজন কর্মী তার মালিকের অধীন যত দিন কাজ করবে তত দিনের অবসর সুবিধা পাবেন এবং এই জন্যই প্রতি বছর কথাটি লেখা আছে।
⛔ ডাক্তার এবং নার্স: ইপিজেডের জন্য
ইপিজেডের প্রত্যেকটি কারখানার জন্য নিজস্ব ডাক্তার বা নার্স প্রয়োজন আছে কি না?
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ এর ধারা-৩৭ অনুযায়ী প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে ইপিজেডের হাসপাতালের সদস্যপদ গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া ইপিজেড শ্রম আইনের অন্য কোথাও ডাক্তার বা নার্সের বিষয়ে কোন কিছু উল্লেখ নেই।
তাই এটা বলা যায়, যে সকল প্রতিষ্ঠানসমূহ ইপিজেডের হাসপাতালের সদস্যপদ গ্রহণ
করবেন, তাদের জন্য নিজস্ব মেডিকেল রুম বা ডাক্তার বা নার্সের প্রয়োজন নেই।
তবে যদি বেপজা কর্তৃপক্ষ কোন নোটিশ বা গেজেটের বা বিধিমালার মাধ্যমে
পরবর্তীতে কোন ডাক্তার বা নার্সের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানান তবে
সেক্ষেত্রে ডাক্তার বা নার্সের প্রয়োজন হতে পারে।
কিন্তু বর্তমান ইপিজেড শ্রম আইন অনুযায়ী কোন আলাদা ডাক্তার বা নার্সের প্রয়োজন নেই।
এছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান যদি চায় তাদের নিজস্ব সুবিধার জন্য আলাদা ডাক্তার বা
নার্স রাখবেন সেক্ষেত্রে রাখতে পারবেন কিন্তু তাহা আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলক
নয়।
তাই প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানকে ইপিজেড হাসপাতালের সদস্যপদ নিতে হবে
বাধ্যতামূলকভাবে কিন্তু তাদের নিজস্ব ডাক্তার বা নার্স রাখার প্রয়োজন নেই।
⛔ কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটির দেয়া যাবে না:
সবাই আমার কথা শুনে একটু অবাক হয়েছিলেন যে কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দেয়া যাবে না।
শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে প্রত্যেক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে দেড় দিন এবং কারখানাকে একদিন সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে।
এবার আপনি খুব জ্ঞানী মানুষের মত করে যে কাজটি করেন তা হল সাপ্তাহিক ছুটির
দিনে উৎসব ছুটি দিয়ে দেন।খুবই ভাল আপনি শ্রমিকে ভালবেসে সাপ্তাহিক ছুটির
দিনে উৎসব ছুটি দিলেন।
এবার বলেন দাদা শ্রমিকে আপনি ঘোষনা করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি
দিলেন তাহলে শ্রমিক উক্ত সপ্তাহে কোন সাপ্তাহিক ছুটি পায়নি কারন আপনিই
শ্রমিকে উক্ত সপ্তাহে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিয়েছেন এবং হাজিরা
খাতায় উৎসব ছুটি লিখেছেন কিন্তু সাপ্তাহিক ছুটি লিখেন নাই।
শ্রম আইনের ১০৪ ধারাতে এবং বিধিমালার ১০১ বিধিতে বলা আছে যদি কোন শ্রমিকে
সাপ্তাহিক ছুটি দেয়া না হয় বা যায় তবে পরর্বতী ৩ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণমূলক
সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করতে হবে।
আমার যুক্তি খুব সাধারণ আপনি সাপ্তাহিক ছুটি দিনকে উৎসব ছুটি দিয়ে রিপপ্লেস
(replace) করতে পারবেন কোথাও বলা নাই তাই আপনি শ্রমিকে যে সাপ্তাহিক ছুটি
দেননি সেটি দিয়ে দেন।
তাহলে আর সমস্যা নেই কারন আপনি শুক্রবার ছাড়া উৎসব ছুটি দিতে পারে না তাহলে সাপ্তাহিক ছুটির ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেন।
অনেকে বলার চেষ্টা করবেন যে আমি শ্রমিকে শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে তাহলে আবার
ক্ষতিপূরণ কি জন্য। দাদা শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে এবং হাজিরা খাতায় কিন্তু
উৎসব ছুটি লিখিছেন সেখানে কিন্তু সাপ্তাহিক/উৎসব লেখা যায় না কারন একদিনে
দুটি ছুটি দেয়া যাবে তা কিন্তু বলা নাই শ্রম আইনে।তবে সাপ্তাহিক ছুটি না
দিলে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি দিতেই হবে তা শ্রম আইনে বলা আছে।
সরকারী প্রতিষ্ঠানের কথা টেনে লাভ নাই কারন সরকারী কর্মীরা নিজস্ব চাকুরী বিধিমালাতে চলে।
আশা করি এরপরে আর কেউ ব্যাখ্যা চেয়ে লজ্জা দিবেন না।
⛔ শ্রম আইনে অসদাচরণঃ কারণ দর্শানোর নোটিশ নিয়ে কথা
কোন শ্রমিক (বা কর্মচারী) অসদাচরণ করলে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ যথাযথ
তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি প্রদানের বিধান দিয়েছে। শ্রম আইনের ২৩ ধারা
অসদাচরণের উপাদান এবং ২৪ ধারা তদন্ত ও শাস্তির প্রক্রিয়া বিধৃত করেছে। এর
ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া এবং প্রদত্ত শাস্তি চ্যালেঞ্জযোগ্য হতে
পারে। মাননীয় শ্রম আদালতে এবং ক্ষেত্র বিশেষে মাননীয় হাই কোর্ট বিভাগে তা
করা যেতে পারে।
এবার একটি কারণ-দর্শানো বা শো-কোজ নোটিশের অংশ বিশেষ আপনাদের দেখাচ্ছিঃ
“আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এই যে, আপনি নিয়মিত ভাবে কারখানার সুইং
মেশিনের পার্টস চুরি করে বাহিরে নিয়ে বিক্রি করেন। যাহার একাধিক প্রমাণ
কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে। আপনার উক্ত আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী
“অসদাচরণের” আওতায় পড়ে। যাহা শাস্তি যোগ্য অপরাধ ...”।
দেখার বিষয় এই কারণ-দর্শানো নোটিশে সমস্যা কি?
প্রথমতঃ
কবে-কোথায় কথিত চুরি সংগঠিত হয়েছে তা নোটিশে উল্লেখ নেই। কি কি পার্টস চুরি হয়েছে তা নেই। কোন মেশিনের পার্টস তাও উল্লেখ নেই।
কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে হলে তা সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হতে হবে; যাতে করে
অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগ কি তা বুঝে তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিয়ে আত্মপক্ষ
সমর্থনের সুযোগ পান। অভিযোগ যে সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হতে হবে- সে বিষয়ে
আমাদের মাননীয় উচ্চ আদালত থেকে একাধিক মামলায় সিদ্ধান্ত রয়েছে।
অভিযোগ সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি স্বীকারোক্তি দিলেও
পরে তা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন যে জোর করে ও তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে উক্ত
স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
আরেকটি বিষয়, কর্তৃপক্ষের কাছে কোন “প্রমাণ” থাকলে তারা তা তদন্ত কমিটির
কাছে দাখিল করবেন। কারণ-দর্শানোর নোটিশে তার উল্লেখ অভিযুক্তের প্রতি এক
প্রকার হুমকি এবং অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের আগেই ঘটনার বিষয়ে
পক্ষপাতদুস্টভাবে দোষী সাব্যস্ত করার এবং একতরফা সিদ্ধান্তে পৌঁছার দায়ে
অভিযুক্ত হতে পারে।
⛔ মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধার বিশ্লেষণ:
বাংলাদেশ শ্রম আইনে মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধাকে চারটি ভাগে ভাগ করেছে।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে
সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ করেন এবং তার ২টি সন্তান জীবিত নেই।
সেক্ষেত্রে তিনি ১১২ দিনের মজুরীসহ ছুটি এবং ধারা-৪৮ অনুযায়ী ১১২ দিনের সুবিধা পাবেন।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে
সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ না করে থাকেন অথবা তার ২টি সন্তান জীবিত
থাকে।
তবে তিনি মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।
এক্ষেত্রে তার বৎসরিক ছুটি এবং অসুস্থতা ছুটি প্রথমে ভোগ করার পরে আর ছুটি প্রয়োজন হলে মজুরীবিহীন ছুটি পাবে।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা:
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে নারী কর্মীরা মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আবেদন করার পূর্বেই সন্তান জন্ম দান করেন।
উক্ত ক্ষেত্রে নারী কর্মী শুধুমাত্র ৫৬ দিনের ছুটি পাবেন এবং ১১২ দিনের মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি:
২০১৮ সালের সংশোধনীর পূর্বে কোন নারীর গর্ভপাতের জন্য কোন ছুটি বা সুবিধা
পাইবার সুযোগ ছিল না কিন্তু ২০১৮ এর সংশোধনী অনুযায়ী কোন নারী কর্মীর
গর্ভপাত হলে।
তিনি কোন মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন
⛔ অংশগ্রহণ কমিটি:
৬ জনের কম এবং ৩০ জনের অধিক হবেনা।
সাধারণ শ্রমিক সংখ্যা, কমিটির সদস্য সংখ্যা
১-১০০ জন = ৬ জন
১০১-৪০০ জন = ১০ জন
৪০১-৮০০ জন। = ১২ জন
৮০১-১৫০০ জন। = ১৪ জন
১৫০১-৩০০০ জন = ১৮ জন
৩০০১-৫০০০ জন। = ২২ জন
৫০০১-৭৫০০ জন = ২৪ জন
৭৫০১-ততোধিক = ৩০ জন
⛔ শ্রম আইন অনুসারে কিছু ছুটির হিসাব
শ্রম আইন অনুসারে কিছু ছুটির বিবরণঃ
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি।
২। সাপ্তাহিক ছুটি।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি।
৪। অসুস্থতা ছুটি।
৫। বাৎসরিক ছুটি।
৬। উৎসব ছুটি।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের প্রথমে মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা বলা আছে।
শ্রম আইনের ধারা-৪৬ অনুযায়ী একজন নারী কর্মী মোট ১৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি পাইবেন।
২। সাপ্তাহিক ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সাপ্তাহিক ছুটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
কারখানা এবং সড়ক পরিবহনের কর্মীরা এক দিন এবং দোকান,বাণিজ্যিক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দেড় দিন করে সাপ্তাহিক ছুটি পাবে।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি:
ধারা-১১৫ অনুযায়ী একজন কর্মী ১০ দিন নৈমেত্তিক ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন।
তবে কোন কর্মী বছরের মাঝামাঝি সময়ে যোগদান করলে তিনি আনুপাতিক হারে নৈমেত্তিক ছুটি পাইবেন।
৪। অসুস্থতা ছুটি:
একজন কর্মী শ্রম আইনের ১১৬ ধারা অনুযায়ী ১৪ দিন অসুস্থতা ছুটি পাইবেন।
উক্ত ছুটি পেতে হলে একজন কর্মীকে ডাক্তারের প্রত্যয়নপএ প্রদর্শন করতে হবে।
৫। বাৎসরিক ছুটি:
কোন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য একদিন বাৎসরিক ছুটি পাইবেন।
শ্রম আইনে একটি মাএ ছুটি যা নগদায়ন করা যায়।
৬। উৎসব ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১১৮ ধারা অনুযায়ী একজন কর্মী ১১ দিন উৎসব ছুটি পাইবেন।
প্রতি বছর ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে উক্ত ছুটির দিনগুলো নির্ধারন করতে হবে।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি:
শ্রম আইনের দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরন ছুটি দেয়ার কথা বলা আছে।
সাপ্তাহিক ছুটি এবং উৎসব ছুটির ক্ষেএে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি প্রদান করতে হবে।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি:
শ্রম আইনের ৫ম তফসিলে উক্ত ছুটির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১ বছরের বেশি কেউ উক্ত ছুটি পাইবেন না এবং পেশাগত ব্যাধির জন্য উক্ত ছুটি ২ বছরের বেশি কেউ পাবেন না।
⛔ সেফটি কমিটি গঠনের সময়সীমা:
*বিদ্যমান কারখানাসমুহের খেত্রে এ বিধিমালা কর্যকর হবার তারিখ হতে ৬(ছয়) মাসের মধ্যে
এবং
*বিধিমালা কার্যকরী হওয়ার পর স্থাপিত কারখানাসমুহের খেত্রে উৎপাদন চালু হওয়ার ৯(নয়) মাসের মধ্যে সেফটি কমিটি গঠণ করতে হবে।
সেফটি কমিটির সদস্য সংখ্যা:
*সেফটি কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৬(ছয়) এর কম এবং ১২(বার) এর অধিক হবেনা।
মালিক এবং শ্রমিক সমসংখ্যক প্রতিনিধি থাকবে।
সাধারণ শ্রমিক সংখ্যা, কমিটির সদস্য সংখ্যা
৫০-৫০০ জন। = ৬ জন
৫০১-১০০০ জন। = ৮ জন
১০০১-৩০০০ জন। = ১০ জন
৩০০১-ততোধিক। = ১২ জন
(শ্রম বিধি-৮১)
⛔ পদত্যাগ (Resignation) বেপজার জন্য:
বেপজা নির্দেশনা অনুযায়ী শুধুমাএ স্থায়ী কর্মীদেরকে চাকুরী হতে পদত্যাগ করার জন্য নোটিশ প্রদান করতে হবে।
কোন স্থায়ী কর্মীকে চাকুরী হতে পদত্যাগের ৩০ দিনের আগাম নোটিশ অথবা ৩০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
কোন অস্থায়ী কর্মীকে পদত্যাগের জন্য কোন নোটিশ বা টাকা প্রদান করতে হবে না।
শ্রম আইনের মত বেপজা নির্দেশনায় কোন সার্ভিস বেনিফিটের ব্যবস্থা নেই স্থায়ী কর্মীদের জন্য।
এছাড়াও কোন কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চালু থাকাকালীন ৬০ দিন
অতিক্রম না করলে চাকুরী হতে পদত্যাগ করতে পারবে না,যদি না মালিকের শর্ত
মানে।
⛔ চুক্তিভিত্তিক(Contractual) কর্মী নিয়োগঃ
দেশের Corporate Office গুলোতে খুব বেশি জন প্রিয় শব্দ হল Contractual Employee.
সবাই প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ প্রদানে বেশ আগ্রহী থাকে কিন্তু শ্রম আইন কি বলে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ দানের বিধান আছে।
তবে ২৮ ধারাতে সুকৌশলে একটা শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে।২৮ ধারা অনুযায়ী কোন
কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন তবে সেটা
উক্ত কর্মীর অবসর গ্রহন করার পরে যদি তিনি উক্ত কাজের জন্য উপযুক্ত হন।
অথাৎ ৬০ বছরের পরে কোন কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন।
আমি শ্রম আইনের ২৮ ধারা মানবো না,চুক্তি করে কর্মী নিয়োগ দিলে তা বৈধ হবে কি না?
বাংলাদেশের চুক্তি আইনটি ১৮৭২ সালের আইন।
উক্ত আইনের ২৩ ধারাতে বলা আছে:
The consideration or object of agreement is lawful; unless it is forbidden by law.
মূল বক্তব্য হল:-
আপনি কোন চুক্তি করেন তা আইনত বৈধ হতে হবে অন্যথায় উক্ত চুক্তি আইনে নিষিদ্ধ।
বিষয়টা কেমন হয়ে গেল না।
শ্রম আইনের ধারা-৫ অনুযায়ী একজন কর্মীকে নিয়োগ দিতে হলে নিয়োগপএ এবং পরিচয়পএ দেয়ার কথা বলা আছে।
কিন্তু আপনি নিয়োগপএ প্রদান না করে দিলেন চুক্তিপত্র,
কি সেই চুক্তিপএ বৈধ, না অবৈধ।
এটা বুঝতে আপনাকে আইনবিদ হতে হবে না নিশ্চয়ই।
"Contractual Employment" শব্দটা ভুলে যেতে পারেন কারন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবৈধ ৬০ বছরের পূর্বে।
⛔বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারাঃ ০৪
শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitiute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী
কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩
মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি
চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের
মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের
দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ধারাঃ১২ কাজ বন্ধ রাখা( Stoppage of work)
১. অগ্নিকান্ড,আকস্মিক বিপত্তি,যন্ত্রপাতি বিকল,বিদ্যুৎ সরবরাহ
বন্ধ,মহামারী,ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা মালিকের নিয়ন্ত্রন বহির্ভুত অন্য
কোন কারনে প্রয়োজন হলে মালিক যেকোন সময় তার প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা বা শাখা
সমুহ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারবেন।এবং যে কারনে উক্তরুপ বন্ধের
আদেশ দেওয়া হবে তা বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত এই আদেশ বহাল রাখতে পারবেন।
২. যদি উক্তরুপ বন্ধের আদেশ কর্মসময়ের পরে দেওয়া হয়,তা হলে পরবর্তী কর্মসময়
শুরু হওয়ার আগে মালিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ঠ শাখার নোটিশ বোর্ড বা
প্রকাশ্য কোন স্থানে লটকাইয়া দিয়ে বিষয়টি শ্রমিককে অবহিত করবেন।
৩. উল্লেখিত নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন শুরু হবে ও কাজ পুনরায় শুরু হওয়ার
কোন সময় তাকে কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশ থাকবে।
৪. যদি উক্তরুপ বন্ধ কর্মসময়ের মধ্যে সংঘটিত হয় তা হলে মালিক উপধারা ২ এর
পন্থায় শ্রমিকগনকে যথাশিঘ্র অবহিত করবেন এবং নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন
শুরু হবে ও কাজ পুনরায় শুরু হওয়ার কোন সময় তাকে কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে
সে সম্পর্কে নির্দেশ থাকবে।
৫. উক্তরুপ কাজ বন্ধের পর যে সমস্ত শ্রমিককে কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ
দেওয়া হবে,তাদের অবস্থানের সময় ১ ঘন্টার কম হলে তারা মজুরী নাও পেতে পারে
এবং অবস্থানের সময় এর অধিক হলে অবস্থান কালীন সম্পূর্ণ সময়ের জন্য মজুরী
পাবেন।
৬. যদি কাজ বন্ধ এর মেয়াদ এক কর্মদিবসের চেয়ে বেশি না হয় তা হলে সংশ্লিষ্ঠ
কোন শ্রমিক, উপধারা ৫ এর ক্ষেত্র ব্যতীত,কোন শ্রমিক মজুরী নাও পেতে পারে।
৭. যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ১ কর্মদিবসের বেশি হয় তাহলে সাময়িক বা বদলী শ্রমিক
ব্যতীত সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিককে ১ দিনের অতিরিক্ত সকল বন্ধ কর্মদিবসের জন্য
মজুরী প্রদান করতে হবে।
৮. যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ৩ কর্মদিবশের বেশি হয় তাহলে শ্রমিকগনকে ধারাঃ১৬ (**** শীঘ্র আলোচনা করা হবে) অনুযায়ী লে অফ করা হবে।
৯. এই লে অফ কাজ বন্ধ হওয়ার ১ম দিন হতে বলবত হবে।এবং ১ম তিন দিনের জন্য
প্রদত্ব কোন মজুরী সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিককে প্রদেয় লে-অফ কালীন ক্ষতিপূরণ এর
সাথে সমন্বয় করা হবে।
১০. কাজ বন্ধের কারনে যদি কোন ঠিকা হারের শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে
উপধারা ৯ এর প্রয়োজনে তার পূর্ববর্তী এক মাসের গড় দৈনিক আয়কে দৈনিক মজুরী
বলে গন্য করা হবে।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ শ্রম ও শিল্প আইন এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫
⛔ধারাঃ২৪ শাস্তির পদ্ধতি(Procedure for punishment)
১. ধারা ২৩ এর অধীনে কোন শ্রমিকের বিরুদ্ধে শাস্তির আদেশ প্রদান কিরা যাবে না,যদি
ক) তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
খ) অভিযোগের একটি কপি তাকে দেওয়া হয় এবং ইহার জবাব দেওয়ার জন্য অন্তত ৭ দিন সময় দেওয়া হয়।
গ)তাকে শুনানীর সময় দেওয়া হয়।
ঘ) মালিক ও শ্রমিকের সম সংখ্যক প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তের পর তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
- তবে শর্ত থাকে যে,উক্ত তদন্ত ৬০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে।
ঙ) মালিক বা ব্যবস্থাপক বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করেন।
২. অসদাচরনের অভিযোগে অভিযুক্ত কোন শ্রমিককে তদন্ত সাপেক্ষে সাময়িক বরখাস্ত
করা যাবে,এবং যদি না বিষয়টা আদালতে বিচারাধীন থাকে,এই সময়িক বরখাস্তের মোট
মেয়াদ ৬০ দিনের অধিক হবে না।
-তবে শর্ত থাকে যে,উক্তরুপ সাময়িক বরখাস্ত কালে মালিক তাকে খোরাকী ভাতা প্রদান করবেন এবং অন্যান্য ভাতা পূর্ণ ভাবে প্রাপ্য হবেন।
৩. সাময়িক বরখাস্তের কোন আদেশ লিখিতভাবে হবে এবং ইহা শ্রমিককে প্রদানের সাথে সাথে কার্যকর হবে।
৪. কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে,তার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি সহায়তা করতে পারবেন।
৫. যদি কোন তদন্তে কোন পক্ষ মৌখিক সাক্ষ্য প্রদান করেন তাহলে যার বিরুদ্ধে
এই সাক্ষ্য প্রদান করা হবে তিনি সাক্ষীকে জেরা করতে পারবেন।
৬. যদি তদন্তে কোন শ্রমিককে দোষী পাওয়া যায়,এবং তাকে ধারা ২৩(১) এর অধীনে
শাস্তি প্রদান করা হয়,তাহলে তিনি তার সাময়িক বখাস্তকালীন সময়ের জন্য কোন
মজুরী পাবেন না।তবে উক্ত সময়ের জন্য তার খোরাকী ভাতা প্রাপ্য থাকবেন।
৭. যদি তদন্তেবকোন শ্রমিকের অপরাধ প্রমানিত না হয় তাহলে তিনি সাময়িক
বরখাস্তকালীন সময়ে কর্মরত ছিলেন বলে গন্য হবেন এবং ঐ সময়ের জন্য তার খোরাকী
ভাতা সমন্বয় সহ মজুরী প্রদেয় হবে।
৮. শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে, শাস্তি অদেশের একটি কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে দিতে হবে।
৯. যদি কোন শ্রমিক মালিক কর্তৃক প্রেরিত কোন নোটিশ,চিঠি, অভিযোগনামা,আদেশ
বা অন্য কোন কাগজপত্র গ্রহন করতে অস্বীকার করেন,তাহলে উহা তাকে প্রদান করা
হয়েছে বলে বুঝতে হবে যদি উহার একটি কপি নোটিশবোর্ডে প্রদর্শিত হয় এবং
এরেকটি কপি মালিকের নথিপত্র হতে প্রাপ্ত শ্রমিকের ঠিকানায় রেজিষ্ট্রি ডাক
যোগে প্রেরন করা হয়।
১০. কোন শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে মালিক সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের পূর্বতন নবি
পত্র, অপরাধের [গুরুত্ব, চাকুরীকালীন কৃতিত্ব ও অবদান] এবং বিদ্যমান অন্য
কোন বিশেষ অবস্থা বিবেচনায় আনবেন।
⛔ মজুরীসহ বাৎসরিক ছুটি শ্রমিক চাওয়ার পর মালিক প্রদান না করিলে মালিকের শাস্তি:
১১৭(৭) ধারা মূলত মালিকে শ্রমিকের বাৎসরিক মজুরীসহ ছুটি ভোগ করতে বাধা দান থেকে বিরত রাখার জন্য কারা হয়েছে।
এবার একটা ছোট গল্প দিয়ে ধারা ১১৭(৭) সম্পর্কে পরিস্কার হওয়া যাক। রাফি
মামা লুঙ্গি নামক একটি কারখানায় চাকরি করেন।সে এই প্রতিষ্ঠানে ৩ বছর কাজ
করে এবং ধারা ১১৭(৫) অনুযায়ী তার ৪০ দিন ছুটি বকেয়া পাওনা আছে,রাফির
বন্ধুরা সবাই ঠিক করল সবাই ঈদের পরে কুয়াকাটা ঘুরতে যাবে।
যেই কথা সেই কাজ,রাফি মালিকের কাছে ১০ দিনের বাৎসরিক ছুটির জন্য আবেদন
করল,মালিক তাকে জানালেন ঈদের পরে আমেরিকাতে লুঙ্গির শিপমেন্ট আছে।তাই ঈদের
পারে তাকে কোন ছুটি দেয়া যাবে না।
অতএব, মালিকের ব্যবসায়িক প্রয়োজনে রাফির ছুটির আবেদন না মঞ্জুর করা হল।
এবার আসেন দেখি মালিকে ১১৭(৭) ধারায় কি শাস্তি দেয়া হবে। সকলের সুবিধার
জন্য আমি ধারাটি উল্লেখ করে দিয়ে পরে বিশ্লেষণ করলে সকলের জন্য বুঝতে
সুবিধা হবে।
"১১৭(৭) কোন শ্রমিক অর্জিত ছুটির জন্য দরখাস্ত করিলে যদি মালিক কোন কারনে
উহা না-মঞ্জুর করেন,তাহা হইলে উক্ত না- মঞ্জুরকৃত ছুটি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের
হিসাবে উপধারা (৫) অথবা (৬) এ উল্লেখিত সীমার অতিরিক্ত পাওনা হিসাবে যুক্ত
হইবে।"
★ প্রথম বিষয়ে হল, মালিক রাফির যে ১০ দিন ছুটি না মঞ্জুর করেছেন তা তার মোট
বকেয়া সীমার ৫০ দিন ছুটির সাথে যোগ হবে।এটাই হল মালিকের শাস্তি ১১৭(৭)
ধারা অনুযায়ী।
অথাৎ রাফি এখন মোট ৫০ টি ছুটি জমা রাখতে পারবে।
★এখন কথা হল বছরে কতবার মালিককৃত না-মঞ্জুরীকৃত বাৎসরিক ছুটি শ্রমিকের ছুটি হিসাবের সাথে যোগ হবে?
উত্তরটা হল মালিক যতবার বাৎসরিক ছুটি না-মঞ্জুর করবেন ততবার ধারা ১১৭(৫)অথবা(৬) ধারাতে বকেয়া ছুটি হিসাবে যোগ হবে।
★ এই ছুটি নগদায়ন করা যাবে কি না?
নগদায়ন করতে কোন বাধা নেই কারন শ্রম আইনের ধারা ১১ ও বিধি-১০৭ তে বলা আছে।
⛔ সাপ্তাহিক ছুটির আগে ও পরে কর্মী অনুপস্থিত থাকলে সাপ্তাহিক ছুটি পাবে কি না?
উত্তরটা হল ১০০% পাবে।
কারনটা কি?
প্রথমে বুঝতে হবে অনুপস্থিতি কি?
শর্ত হল প্রতিষ্ঠান খোলা থাকতে হবে,প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে অনুপস্থির প্রশ্ন কিভাবে আসে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১২৬ এ বলা আছে নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী কোন ব্যক্তি
কাজে উপস্থিত থাকার কথা কিন্তু তিনি উক্ত সময়ে কাজে না থাকলে,
তাকে বলা হবে অনুপস্থিতি।
আপনারা যখন কোন কর্মীকে নিয়োগপএ প্রদান করেন তখন তার নিয়োগপএে লিখে দেন তার অফিস কোন সময়ে থেকে কোন সময় পর্যন্ত।
তিনি সাপ্তাহিক ছুটি কোন দিন ভোগ করবেন তাও লেখা থাকে।
এবার আসেন ধারা-১১১ তে যেখানে কোন মালিক শ্রম পরিদর্শকের কাছ থেকে কাজের
সময়ের অনুমোদন নিয়ে আসেন সেখানে নিদিষ্ট ভাবে বলা থাকে কোন দিন সাপ্তাহিক
ছুটি থাকবে।
এখন দেখেন,
যেখানে মালিক নিজে দুটি জায়গাতে ঘোষনা দিয়ে রাখছে যে কোন দিনটি সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
ঠিক তার আগে ও পরের দিনটি অনুপস্থিত থাকলে কিভাবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনটি অনুপস্থিত দেখান যায়।
তাহলে যে দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে,তার আগের দিন যারা অনুপস্থিত থাকবে তারা
সাপ্তাহিক ছুটি পেতে হলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আফিসে এসে দারোয়ানের সাথে
কোলাকুলি করে যাবে।
আর রবিবারে এসে বলবে স্যার আমি বৃহ:পতি বার আসি নাই।
শুক্রবার কোলাকুলি করেছি দারোয়ানের সাথে।
শনিবার আসি নাই।
আজকে রবিবার আসছি।
আমি সাপ্তাহিক ছুটি পাব।
এক শ্রেনির লোক আছে যারা বিধি-১০৬ এর কথা বলেন।
বিধি-১০৬ অনুযায়ী আগে ও পরে ছুটির কথা বলা আছে অনুপস্থির জন্য কিছু বলা নাই।
যে দিন একটা প্রতিষ্ঠানের কর্ম দিবস থাকে না, সেই দিনটিকে কিভাবে অনুপস্থিত হিসাবে গন্য করেন।
ভেবেছেন কখন?
আগে নিজেদের ঠিক করেন পরে অন্যের দোষ দেন।
⛔ চাকুরীর বয়স গননার নিয়ম:
কোন কর্মীকে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২য় অধ্যায় অনুযায়ী কোন ক্ষতিপূরণ বা
সুবিধা প্রদানের ক্ষেএে উক্ত কর্মীর চাকুরীর বয়স গননা করা একটি
গুরুত্বপূর্ন বিষয়।
চাকুরীর বয়স গননার ক্ষেএে কিছু ভুল ধারনা আছে।
অনেকের ভুল ধারনা বাস্তবে ২৪০ দিন উপস্থিত থাকলেই তা ১ বছর হিসাবে গননা করা হবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১৪(১) এ বলা আছে
"কোন শ্রমিক কোন প্রতিষ্ঠানে পূর্ববর্তী (১২) বার পজ্ঞিকা মাসে বাস্তবে
অন্তত ২৪০ দিন বা ১২০ দিন কাজ করিয়া থাকেন,তা হলে তিনি যথাক্রমে ১ বছর বা ৬
মাস প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করিয়াছেন বলিয়া গন্য হবে"
এখানে দুটি শর্ত লক্ষ্য করতে হবে,
১। পূর্ববর্তী ১২ পজ্ঞিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তি XYZ কোম্পানিতে ৪ বছর ১১ মাস ২৫ দিন কাজ করেন।তারপরে তিনি ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে চাকুরী থেকে পদত্যাগ করে।
এখন প্রশ্ন হল ধারা ১৪ অনুযায়ী দিপ্তির চাকুরীর বয়স ৫ বছর হবে কি না?
উত্তর হল না।
কারন ধারা-১৪(১) অনুযায়ী দুটি শর্ত পূরন হতে হবে।
১। পূর্ববর্তী ১২ পজ্ঞিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তির ক্ষেএে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল।তিনি ২য় শর্তটি পূরন করেছে ২৪০ দিনে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু যে দিনে চাকুরী ছাড়ছেন।
তার ১২ পজ্ঞিকা মাস পূর্ন হয়নি।
অনেকে ভুল ধরতে চেষ্টা করবেন কিন্তু লক্ষ্য করুন যোগদানের তারিখ থেকে
যোগদানের তারিখ ১২ পজ্ঞিকা মাস হিসাব করে তার মধ্যে ২৪০ দিন কাজের দিন
হিসাব করুন।
তবে আর আমার কথাগুলো ভুল মনে হবে না।
অনেকের কাছে মনে হবে ৬ মাসের বেশি কাজ করলে এক বছর বিবেচনা করতে হবে, আইনে বলা আছে।
হ্যা,শুধুমাএ তা ধারা-১৯ এবং ২(১০) এর ক্ষেএে অন্য কোন ক্ষেএে না।
আর বাস্তবিক কাজের দিনের জন্য ধারা-১৪(২) এ উল্লেখিত দিনগুলোকে গননায় আনতে হবে।
⛔ ধারাঃ ০৪ - শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitiute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী
কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩
মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি
চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের
মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের
দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ কোন কর্মী কি তদন্ত কমিটিতে তার সহায়তার জন্য আইনজীবিকে নিয়ে আসতে পারবে কি না :
আমি নিশ্চিত যে ৯৯.৯৯% বলবেন যে পারবে না কিন্তু আসল কথা হল পারবে।
কিভাবে এবং কোন ধারা বলে পারবে এটা হল প্রশ্ন।
পারবেন ধারা ২৪(৪) অনুযায়ী, এবার আসেন ধারাটাতে কি লেখা আছে
"২৪(৪) কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে, তাহার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত (কোন
ব্যক্তি সাহায্য করিতে পারিবেন) এবং (কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে)তৎকতৃক
মনোনীত কোন ব্যক্তি সাহায্য করিতে পারিবেন।
আপনারা লক্ষ্য করেন যে আমি ধারা ২৪(৪) কে একটু আলাদাভাবে লিখেছি আমার
ব্যাখ্যা করার সুবিধার জন্য। যারা সাধারনভাবে ধারাটি পড়বেন তারা লক্ষ্য
করেন।
এই ধারাতে " এবং " একটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
ধারা ২৪(৪) এ দুটি বাক্য আছে যা "এবং" দিয়ে কৌশালে বলা হয়েছে যাতে আম জনতা
বুঝতে না পারে। আমি যেভাবে লিখেছি আশা করি আপনারা বুঝতে পারবেন।
এছাড়াও কতজন লোককে কর্মী নিয়ে আসতে পারবে তদন্ত কমিটিতে সেটার কোন সংখ্যা বলা নাই তাই যত ইচ্ছা তত।
অনেকে এই লেখা পাড়ার পরে তদন্ত কমিটির সদস্যের সাথে সাহায্যকারীকে মিলাবেন না যেন কারন দুটি দুই জিনিস।
আর যারা English এর Compound Sentence এবং বাংলায় মিশ্র বাক্য ভাল ভাবে জানেন তারা "এবং" এর ব্যবহারটা ভাল ভাবে বুঝতে পারবেন।জেনে
0 Comments