প্রাথমিক চিকিৎসা First Aid বিস্তারিত নীতিমালা সমুহের বর্ণনা:

প্রাথমিক চিকিৎসা First Aid নীতিমালা

স্বাস্থ্য বিষয়ে জরুরী অবস্থায় তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এ কারণে এ পদ্ধতিগুলো নিচে সন্নিবেশিত হলঃ

#  কেউ অজ্ঞান হলে তাৎক্ষণিক ভাবে করণীয়
  • তাকে একটা সমতল ভূমিতে শুইয়ে দিন এবং তার পাশে হাটু গেড়ে বসুন। কপালে হাত দিয়ে আস্তে আস্তে মাথাটিকে কাত করে দিন। তার মুখটি হা করে দিন। যদি সে শ্বাস নিতে না পারে, তবে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করুন।
  • তার চিবুক তুলে ধরুন যাতে চোয়াল সামনের দিকে যায় এবং মুখ খুলুন ও নাকে দু’আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরুন।
  • বড় একটা নিঃশ্বাস নিন এবং আপনার ঠোঁট তার মুখে চেপে ধরুন, এরপর আস্তে আস্তে তার মুখে শ্বাস গেড়ে দিন।
  • নিঃশ্বাসের সঙ্গে তার বুক উঠা-নামা করছে কিনা লক্ষ্য করুন।
  • প্রয়োজনে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

#বিদ্যুতায়িত হলে:
  • বিদ্যুতায়িত ব্যক্তিকে মাটিতে শুইয়ে মাথা এক পাশে কাত করে দিন।
  • কম্বল দিয়ে তাকে ঢেকে রাখুন যাতে সে উষ্ণ থাকে।
  • যদি সে পিপাসা বোধ করে তবে তার ঠোট ভেজা কাপড় দিয়ে ভিজিয়ে দিন।
  • যদি সে অজ্ঞান হয়ে যায় তবে তার শ্বাস-প্রশ্বাস লক্ষ্য করুন।
  • প্রয়োজনে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

#পুড়ে গেলে :

সাথে সাথে পোড়া অংশটি ঠান্ডা পানিতে ধুইয়ে নিন এবং যতক্ষণ জ্বালা না কমে ততক্ষণ আস্তে আস্তে পোড়া অংশে পানি ঢালুন। যদি ফোস্কা পড়ে তবে এক টুকরা পরিষ্কার কাপড় (তুলা নয় এমন) দিয়ে জায়গাটি ঢেকে রাখুন। ফোস্কাটি ফাটাবেন না। কোন প্রকার ক্রীম বা লোশন পোড়া জায়গার উপরে লাগাবেন না।

#কাপড়ে আগুন ধরলে করনীয়:
  • অগ্নি নির্বপক দ্বারা আগুন নিভিয়ে ফেলুন।
  • ঢিলা ঢালা কাপড় হলে খুলে ফেলুন কিন্তু তবে যেসব কাপড় পোড়ার উপরে লেগে আছে তা খুলবেন না।
  • পানির সাহায্যে পোড়া অংশটি ঠান্ডা করুন, ভুলেও পোড়া অংশে ঘষা দিবেন না।
  • তুলা ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে পোড়া অংশটি ঢেকে রাখুন।
  • কি পরিমান আঘাত পেয়েছে তা বুঝে তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করুন।

#প্রচুর রক্তক্ষরণ:
  • যদি প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তবে সেই অংশটি তুলে ধরুন এবং চারপাশে চাপ দিন যতক্ষণ পর্যন্ত না রক্ত বন্ধ হয়।
  • কিছুক্ষণের জন্য চাপ বন্ধ করুন এবং রুমাল জাতীয় কোন কাপড় পেচিয়ে নিন।
  • ক্ষত অংশের চারপাশে রুমালটি বেঁধে নিন এবং একটি গেজের মাধ্যমে ক্ষতটিকে ব্যান্ডেজ করুন। আহতকে তোলার চেষ্টা করবেন না এবং ক্ষতটিকে পরিস্কারের চেষ্টা করবেন না।
  • তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।

#কেটে গেলে:
  • ডেটল বা সেভলন দ্বারা জায়গাটি পরিস্কার করে নিন।
  • যদি ৫ মিনিটে রক্ত পড়া বন্ধ না হয়, তবে একটি প্যাড ক্ষতটির উপর কিছুক্ষণ চাপ দিয়ে রাখুন।
  • ড্রেসিং করে জায়গাটি বেঁধে রাখুন এবং পরিস্কার রাখুন।

#নাকে রক্ত আসলে:
  • তাকে একটি বেসিনের সামনে মিনিট দশেক নাকে চাপ দিয়ে রাখুন। টেনে রক্ত ভিতরে নেয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • এরপর ও যদি রক্ত বন্ধ না হয় তবে একটি ভেজা কাপড় তার নাকে ২ মিনিটের জন্য চেপে ধরুন এবং এর পর আবার নাকে চাপ দিয়ে রাখুন।
  • রক্ত পড়া বন্ধহবার ঘন্টা চারেক পর্যন্ত নাক দিয়ে বাতাস বের না করতে বলুন।

#মাথা বা মুখের ক্ষত:
  • যদি মাথা ফেটে যায় তবে ক্ষত অংশে একটি ভেজা কাপড় জড়িয়ে দিন। এটা ক্ষতটি স্ফীত হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
  • যদি আথা হতে রক্তক্ষরণ হয় তবে একটি পরিস্কার কাপড় ক্ষতের উপর চাপ দিয়ে রাখুন।
  • তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।

#  খিচুনী বা পেশীর টান:
  • যেভাবে আরাম বোধ করে সেভাবে অঙ্গটি রাখুন এবং তাতে বরফ শীতল পানি ঢালুন।
  • পেশীর চারপাশে তুলা দিয়ে ব্যান্ডেজ করুন।

# চোখে ময়লা পড়লে:
  • কিছুক্ষণ চোখ বুঝে অপেক্ষা করুন দেখুন, স্বাভাবিক চোখের পানি দিয়ে ময়লা ধুয়ে যায় কিনা।
  • যদি তাতে ধুয়ে না যায় তবে পর্যাপ্ত আলোতে হাত দিয়ে আস্তে আস্তে করে চোখটি খুলুন এবং চোখের সাদা অংশে ময়লা থাকলে একটি রুমাল দিয়ে ময়লাটি চোখের কোণে নিয়ে আসুন।
  • যদি এই পদ্ধতিতে কাজ না হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।


অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থাদি:

রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস ইন্ডাট্রিজ এর অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য অগ্নি দূর্ঘটনা এড়ানো ও অগ্নি নির্বাপনের বিষয়ে বিশেষ গরুত্ব দিয়ে আমরা নিুর্লিখিত ব্যবস্থাদি ও পদক্ষেপ নিয়েছি। যা প্রতিটি শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগনকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

প্রথমে আমরা আগুনের ধরণ সম্বন্ধে আলোচনা করবো।
সাধারনতঃ চার ধরণের আগুন আছে। যেমনঃ
  1. কঠিণ পদার্থের আগুন (সলিড ফায়ার)
  2. তরল পদার্থের আগুন (ইনফ্লেইমব্ল লিকুইড ফায়ার)
  3. বৈদ্যুতিক আগুন ও
  4. বিস্ফোরক আগুন।


#  উপোরোক্ত আগুন সমূহ নির্বাপনের জন্য নিম্মলিখিত পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে:

কঠিন পদার্থের আগুন (সলিড ফায়ার)ঃ
এই আগুন সাধারনতঃ কাপড়, কাগজ, কাঠ, রাবার ইত্যাদি লেগে উৎপন্ন হয়ে থাকে। সাধারনত পানি ব্যবহার করে এই আগুন নেভানো যায়। এ ছাড়া ও ভেজা কাপড় দিয়ে অথবা কম্বল দিয়ে ও এই আগুন নেভানো যায়।
তরল পদার্থের আগুন ( ইনফ্লেমেবল লিকুইড ফায়ার)ঃ
এই আগুন সাধারনতঃ তেল, পেট্রোল লেগে উৎপন্ন হয়। পানি দিয়ে এই আগুন নেভানোর চেষ্টা করা মোটেই উচিৎ না।
বৈদ্যুতিক আগুনঃ
বৈদ্যুতিক তারে শর্ট সার্কিট থেকে অথবা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে এ আগুন উৎপত্তি হয়। এ ধরনের আগুনে কখনো পানি জাতীয় নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা নিষেধ। ইহা ব্যবহার করলে বিদ্যুতায়িত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এই জাতীয় আগুন নিভানোর জন্য সার্কিট ব্রেকার ও মেইন সুইচ বন্ধ করতে হবে। পাউডার টাইপ এক্সটিংগুইশার অথবা হ্যালন বা কার্বন- ডাই- অক্সাইড  এক্সটিংগুইশার ব্যবহার করতে হবে।

বিষ্ফোরক আগুনঃ
এই আগুন সাধানতঃ উচ্চচাপযুক্ত সিলিন্ডার, ক্ষয়িষ্ণু দ্রব্য, বোমা বা, গ্যাস থেতে উদ্ভুত হয়। এ আগুন নিভানোর জন্য উপরোক্ত ২ ও ৩ এ বর্ণিত পদ্ধতি পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যবহার করা হয়।


#অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটলে নিুলিখিত বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে :
  • ধোঁয়া প্রশ্বাসের সংগে ভিতরে নেয়া যাবে না।
  • কাপড় অথবা ভেজা টাওয়েল দিয়ে মুখ ঢাকতে হবে।
  • সকল দরজা জানালা খুলে দিতে হবে।
  • সবাই এক সংগে বের হবার জন্য দরজার  দিকে যেতে তাড়াহুড়া করবেন না।

Collected

Post a Comment

0 Comments