COMPLIANCE কি এবং কেন By Md. Golam Newaj Babul

গার্মেন্টস কারখানা গুলোর কারনে এদেশে ১৯৯৮ সাল হতে compliance নামক শব্দটির প্রচলন শুরু হয়। এর অর্থ হলো প্রতিপালন করা অর্থাৎ দেশের শিল্প কারখানায় শ্রম আইনের বাস্তবায়ন ও যথাযথ প্রয়োগ। 
 
১৯৮০ এর পর হতে এদেশে গার্মেন্টস শিল্পের প্রতিসঠা শুরু হয় যেটাকে বাংলাদেশের শিল্প বিপ্লব। সুচনা লগ্ন হতে এই শিল্পের মালিক শ্রমিক কেহই শ্রম আইন বলতে কোন আইন আছে এটা অধিকাংশই জানত না,বুঝত না। সেই সময়ে মারাত্মক বেকারত্তের যুগে এই শিল্প বেশ কর্ম সংস্থান করেছে। এর সুবাদে মান্নুস ধীরে ধীরে হাতে নগদ অর্থের আনাগোনা শুরু হয়। এই সুযোগে অধিকাংশ মালিক BLL বলি আর যাই বলি কিছুই মানতো না। 
 
ISO- বা  SA 8000 বা অন্য কোন পদ্ধতি বা আইন এদেশে কেউ জানত না। মানতো না অথবা জেনেও মানতে চাইত না। ১৯৮২ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত কোন ক্রেতা ও ততকালে কোটা পদ্ধতির ভিত্তিতে তাদের পন্য নিয়ে যেত। এই সময়ের মদ্ধ্যে এই শিল্পের শ্রমিক কর্মচারিদের উপর বিবিধ অনিয়ম,বেতন ওটি কম দেওয়া, মেটারনিটি বেনিফিট না দেওয়া, অধিক হারে শিশুশ্রম ব্যবহার করা, বিভিন্ন ভাবে অপদস্ত করা, যৌন হয়রানি,মার ধোর, কথায় কথায় চস্কুরি চ্যুত করা ইত্যাকার পরিস্থিতিতে  USA, CANADA সহ বিভিন্ন দেশের শ্রমিক সংস্থা,তাদের দেশের ক্রেতা গোসঠি  আমাদের গার্মেন্ট সহ অন্যান্য শিল্পের উপর নজরদারি করা শুরু করে এবং বেশ বাজে ধারনা পায়। 
 
ইতিমদ্ধ্যে বেশ কিছু  কিছু অগ্নি দুর্ঘটনা ও ঘটে যেগুল সারা বিশ্বে  মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হয়। এমন কি আমাদের দেশ থেকে আর গআর্মেন্ট না নেওয়ার প্রক্রিয়া হাতে নেয়। 
 
আবার ২০০৫ সাল হতে ততকালে প্রবর্তিত কোটা পদ্ধতি প্রত্যা্হার করে নেওয়ার পর হতেই একটি  non tariff barrier  হিসাবে compliance পদ্ধতি চালু করে। অর্থাত যে সব কারখানা  এদেশের বিদ্যমান শ্রম আইন প্রতিপালন করবে না তাদেরকে কোন কার্যাদেশ দেওয়া হবে না এমন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয় যাকে বলা হচ্ছে compliance। যা বর্ত্মানে সকল প্রকার কারখানায় বাধ্যতামূলক। ২০০৫ এর আগে আমাদের শ্রম দপ্তর গুলো শ্রম আইন বাস্তবায়নে  তেমন দায়িত্তশীল ছিল না।

২০০৫ এর পর আজ অবধি আমাদের শিল্প কারখানায় ওই compliance নামিয় শ্রম আইন বাস্তবায়নে মালিক পক্ষ খুব ই ততপর। কিন্তু এর মাঝেও  ডাল মে কুছ কালা হয়। মালিক তার ব্যবসায়িক প্রয়োজনে  ISO, SEDEX, WRAP, BSCI  ইত্যাদি সনদ নিচ্ছে উপরের খোলস হিসাবে কিন্তু যারা HR এ চাকুরি করে তারা সবাই জানি এবং জানে কত রকম দুই নম্বরি করতে হয়। 
 
যেদেশে এখন শ্রম বান্ধব শিল্প সংস্ক্রিতি গড়ে উঠে নাই এবং যেদেশে মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা দের দেশের শ্রম আইন বা অন্য কোন আইনে তার চাকুরি সুরক্ষিত নয়,এবং যেদেশে এই মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপক নামের ক্রিতদাস প্রথা বিদ্যমান সেদেশে সে ক্রেতা  কমিউনিটি র কারনে বর্ত্মানে যতটুকু সুযোগ স্রিস্টি হয়েছে সেটা কি মন্দের ভালো নয়। তাই আমি প্রতিনিয়ত বলি ক্রেতা কমিউনিটি জিন্দাবাদ। আর সব কিছুর সারমর্ম  হলো কর্তার ইচ্ছায় কর্ম হয়। 
 
শ্রিলংকায়, ভারতে  মানব সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় আছে। সেখানে কম্পানির এমডি নিজেও অই কোম্পানির চাকুরে এবং তিনিও একই শ্রম আইনের আওতায় কাজ করেন।

আমি বিগত ২০০২ সাল হতে দেশের শিল্প কারখানায় কর্মরত প্রায় ২৫/২৬ লক্ষ মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপকদের শ্রমাইনের আওতায় তাদের চাকুরি সুরক্ষার জন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক লিখালেখি করেছি। তদবির করেছে।   
 
সর্বশেষ গত ২০১৮ সালের শ্রম আইন সংশোধন কালে ততকালিন শ্রম মন্ত্রির সাথে সাক্ষাত করে তার হাতে এবং সংশোধনি কমিটির কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলাম কিন্তু কাজ হয় নাই। 
 
উল্ল্যেখ্য, ১৯৯৮ হংকং এবং ব্যংককে দুই দফা এশিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন শিল্প বিশেস করে গার্মেন্ট শিল্পে compliance ব্যবস্থা প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষনের ও কর্মশালার ব্যবস্থা করে। ততকালে সমগ্র বাংলাদেশ হতে মোট পাচজনকে সিলেক্ট করা হয় আমার চাকুরির সুবাদে আমি ইয়ং ওয়ানের পক্ষ হতে নমিনেসন পাই এবং এই প্রথম BSCI এবং WRAP এর আয়োজিত প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহন করেছিলাম।

Post a Comment

0 Comments