শ্রম আইনে অসদাচরণঃ কারণ দর্শানোর নোটিশ নিয়ে কথা

কোন শ্রমিক (বা কর্মচারী) অসদাচরণ করলে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি প্রদানের বিধান দিয়েছেশ্রম আইনের ২৩ ধারা অসদাচরণের উপাদান এবং ২৪ ধারা তদন্তশাস্তির প্রক্রিয়া বিধৃত করেছেএর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া এবং প্রদত্ত শাস্তি চ্যালেঞ্জযোগ্য হতে পারেমাননীয় শ্রম আদালতে এবং ক্ষেত্র বিশেষে মাননীয় হাই কোর্ট বিভাগে তা করা যেতে পারে
এবার একটি কারণ-দর্শানো বা শো-কোজ নোটিশের অংশ বিশেষ আপনাদের দেখাচ্ছিঃ
আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এই যে, আপনি নিয়মিত ভাবে কারখানার সুইং মেশিনের পার্টস চুরি করে বাহিরে নিয়ে বিক্রি করেনযাহার একাধিক প্রমাণ কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছেআপনার উক্ত আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ীঅসদাচরণেরআওতায় পড়েযাহা শাস্তি যোগ্য অপরাধ ...”।
দেখার বিষয় এই কারণ-দর্শানো নোটিশে সমস্যা কি?
প্রথমতঃ কবে-কোথায় কথিত চুরি সংগঠিত হয়েছে তা নোটিশে উল্লেখ নেইকি কি পার্টস চুরি হয়েছে তা নেইকোন মেশিনের পার্টস তাও উল্লেখ নেই
কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে হলে তা সুনির্দিষ্টস্পষ্ট হতে হবে; যাতে করে অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগ কি তা বুঝে তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পানঅভিযোগ যে সুনির্দিষ্টস্পষ্ট হতে হবে- সে বিষয়ে আমাদের মাননীয় উচ্চ আদালত থেকে একাধিক মামলায় সিদ্ধান্ত রয়েছে
অভিযোগ সুনির্দিষ্টস্পষ্ট না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি স্বীকারোক্তি দিলেও পরে তা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন যে জোর করেতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে উক্ত স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে
আরেকটি বিষয়, কর্তৃপক্ষের কাছে কোনপ্রমাণথাকলে তারা তা তদন্ত কমিটির কাছে দাখিল করবেনকারণ-দর্শানোর নোটিশে তার উল্লেখ অভিযুক্তের প্রতি এক প্রকার হুমকি এবং অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের আগেই ঘটনার বিষয়ে পক্ষপাতদুস্টভাবে দোষী সাব্যস্ত করার এবং একতরফা সিদ্ধান্তে পৌঁছার দায়ে অভিযুক্ত হতে পারে
ড. উত্তম কুমার দাস, এডভোকেট,
হাই কোর্ট বিভাগ, সুপ্রীম কোর্ট অব বাংলাদেশ,
 ই-মেইল: advocateudas@gmail.com

Post a Comment

0 Comments