EPZ Labour Law 2019

ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন অনুযায়ী দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরনমূলক ছুটির কথা বলা আছে।
ইপিজেড শ্রম আইনের ৪১ ধারাতে বলা আছে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটির বিষয়ে।

কোন কর্মী যদি তার প্রাপ্য ১ দিন সাপ্তাহিক ছুটি থেকে বঞ্চিত হন তবে তাকে পরবর্তী ৬ দিনের মধ্যে ১ দিনের ছুটি প্রদান করতে হবে।

অন্য দিকে, ৫৩ ধারাতে উৎসব ছুটির বিষয়ে বলা আছে, উৎসব ছুটির দিনে কোন কর্মীকে কাজ করতে বলা হলে তাকে মজুরীসহ ২ দিনের ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি প্রদান করতে হবে।

তবে উৎসব ছুটির বিনিময়ে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
ইতিপূর্বে ইপিজেড নির্দেশিনাতে বলা ছিল, যদি কোন কর্মী ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি ভোগ না করে,

তাকে তার ছুটির বিনিময়ে অর্থ প্রদান করা হলে,উক্ত কর্মীকে ক্ষতিপূরণমূলক উৎসব ছুটি প্রদান প্রয়োজন হবে না।
কিন্তু ২০১৯ সালের ইপিজেড শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণমূলক ছুটির বিনিময়ে শুধু অর্থ প্রদান করলে তা বে-আইনি হবে।
মজুরী এবং ছুটি দুটিই প্রদান বাধ্যতামূলক, তাই ছুটির বিনিময়ে শুধু মাএ অর্থ প্রদান গ্রহনযোগ্য নয়।

_________________________________________

ক্ষতিপূরনমূলক ছুটির পরিবর্তে শুধু অর্থ প্রদান বৈধ কি না

বাংলাদেশ শ্রম আইনের দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ধারা-১০৪ এবং বিধি-১০১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদানের কথা বলা আছে।

বিধি-১০১ অনুযায়ী একজন কর্মীকে কোন কারনে সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করা না গেলে ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করতে হবে।

এছাড়াও ধারা-১১৮ অনুযায়ী কোন কর্মীকে উৎসব ছুটির দিনে কাজ করালে দুই দিনের মজুরী এবং একদিনের ক্ষতিপূরণমূলক বিকল্প ছুটি প্রদান করতে হবে।

উপরের দুটি ধারাতেই ছুটির পরিবর্তে ছুটি এবং মজুরী দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

কোথাও ছুটির বিকল্প হিসাবে মজুরীকে বিবেচনা করা হয় নি।

উভয় ক্ষেত্রেই মজুরী এবং ছুটিকে আলাদা ভাবে দিতে বলা হয়েছে।

কিছু প্রতিষ্ঠান ছুটি প্রদান না করে,কর্মীদেরকে অতিরিক্ত মজুরী প্রদান করছে কিন্তু ছুটি প্রদান করছে না।

যাহা শ্রম আইনের ধারা-১০৪ এবং ধারা-১১৮ অনুযায়ী অবৈধ।

তবে কোন কর্মী যদি ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি ভোগ করার পূর্বে তাহার চাকুরীর অবসান হয়, তাহলে তাকে মোট মজুরীর সমান অর্থ প্রদান করলেই হবে।

কিন্তু চাকুরীতে থাকাকালীন সময়ে বিকল্প ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান বাধ্যতামূলক।

_________________________________________
শিক্ষানবিস কাল

শিক্ষানবিস কাল নিয়ে সবার মাঝে ব্যাপক ভুল ধারনা আছে যেমন অনেকে প্রথমে শিক্ষানবিস কাল হিসাবে ৬ মাস দেয়ার পারে সেটা আবার ৩ মাস বৃদ্ধি করেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
আসলে কি বলা আছে আইনে

কেরানি ধরনের কাজ যারা করেন তাদের শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস। এবার কেরানি নিয়ে আলোচনা করা যাক যে কেরানি কে?

আমরা যারা টেবিলে বসে কাজ করি তাদের কাজেকে কেরানির কাজ বলে। আমার একটা সাধারন উদাহরণ দিয়ে বলার চেষ্টা করলাম এটার আরও অনেক বিষয় আছে কিন্ত তা নিয়ে আলোচনা করলে বিষয়টা জটিল হয়ে যাবে।
যাই হোক, যেকোন কেরানি ধরনের কাজের জন্য শিক্ষানবিস কাল ৬ মাস এবং ইহা কোন অবস্থায় এই ধরনের কর্মীর শিক্ষানবিস কাল আর বৃদ্ধি করা যাবে না।

কেরানি ধরনের কর্মী ব্যতীত অন্য সকল কর্মীদের শিক্ষানবিস কাল হবে ৩ মাস এবং যদি নিয়োগকারী কর্মী অদক্ষ হয় তার শিক্ষানবিস কাল আর বৃদ্ধি করা যাবে না। কিন্ত যদি নিয়োগকারী কর্মীর নিয়োগপএে উল্লেখিত কাজে যদি পূর্ব এক্সপিরিয়েন্স থাকে তবে শিক্ষানবিস কাল ৩ মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৬ মাস করা যাবে কিন্ত ৬ মাসকে কোন ভাবে ৯ মাস করা যাবে না।

অনেকে এই ভুলটি করেন যে শিক্ষানবিস কাল ৬ মাস থেকে ৯ মাস করে থাকেন। কিন্ত আপনি যেকোন ধরনের কর্মীই নিয়োগ করেন না কেন, কোন অবস্থাতেই শিক্ষানবিস কাল ৬ মাসের বেশি হবে না।
৬ মাসে মধ্যে যদি কর্মীর কাজের মান ভাল না হয় তবে আপনি তাকে শুভ বিদায় দিয়ে দিতে পারেন কিন্ত ৬ মাসের পরে একদিন বেশি হলেও সে স্থায়ী কর্মী হিসাবে বিবেচিত হবে আইন অনুযায়ী তাকে আপনি স্থায়ীকরন পএ দেন বা না দেন তাতে কিছু আসে যায় না।


 _________________________________________
নতুন কর্মী নিয়োগ প্রদানে করনীয় বিষয়গুলো 

প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কম বেশি নতুন কর্মী নিয়োগ প্রদান করা হয় এবং এই নতুন শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেএে কিছু একান্ত পালনীয় বিষয় রয়েছে।

১। নিয়োগপএ প্রদান:
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-৬ অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠান কোন কর্মীকে নিয়োগপএ ছাড়া নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন না।
প্রতিষ্ঠানের সাথে কর্মীর সম্পর্ক নির্ধারিত হবে কেবল মাএ নিয়োগ পএের মাধ্যমে অন্য কোন কিছুর মাধ্যমে নয়।
তাই নিয়োগপএ ছাড়া কোন কর্মীকে নিয়োগ প্রদান করা অবৈধ হবে।

২। পরিচয়পএ প্রদান:
নিয়োগপএের পরে অতি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হল পরিচয়পএ প্রদান।
ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-৬ অনুযায়ী পরিচয়পএ প্রদান বাধ্যতামূলক এবং উক্ত পরিচয়পএে কর্মীর ছবি যুক্ত থাকবে।

৩। সার্ভিস বহি প্রদান:
প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত শ্রমিকের জন্য মালিক তার নিজ খরচে ধারা-৭ অনুযায়ী সার্ভিস বহির ব্যবস্থা করিবেন।
সার্ভিস বুকের বহির মাপ এবং সংরক্ষণ পদ্ধতি কতৃপক্ষ দ্বারা নির্ধারিত হবে।

৪। শ্রমিক রেজিস্টারে নাম অন্তর্ভূক্তি:
প্রতিষ্ঠানে কোন কর্মী নিয়োগ করা হলে,ধারা-৮ অনুযায়ী তার নাম শ্রমিক রেজিস্টারে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
শ্রমিক রেজিস্টারে শ্রমিকের নাম অন্তর্ভূক্ত না করলে কর্মী নিয়োগ যথাযথ হবে না।

_________________________________________
ইপিজেডের কর্মীরা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারবেন, ইপিজেড শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত।


_________________________________________
সার্ভিস বেনিফিট

বেপজা নির্দেশনা অনুযায়ী ইপিজেডের মধ্যে কোন প্রকার সার্ভিস বেনিফিটের ব্যবস্থা ছিল না।
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ এর ধারা-২৩ (৪) অনুযায়ী সকল স্থায়ী শ্রমিকে সার্ভিস বেনিফিট প্রদান করতে হবে।

কেবল মাএ স্থায়ী শ্রমিকগন সার্ভিস বেনিফিট প্রাপ্য হবেন কিন্তু কোন অস্থায়ী শ্রমিক সার্ভিস বেনিফিট প্রাপ্য হবেন না।
কোন স্থায়ী শ্রমিক কোন প্রতিষ্ঠানে ৫ বছর বা বেশি এবং ১০ বছরের কম সময় কাজ করলে প্রতি বছর কাজের জন্য ১৫ দিন করে মূল মজুরী প্রাপ্য হবেন।

এছাড়াও ১০ বছর বা বেশি সময় স্থায়ী ভাবে কাজ করলে প্রতিবছর কাজের জন্য ৩০ দিনের মূল মজুরী প্রাপ্য হবেন।
ইপিজেডের শ্রম আইনের নিয়ম অনুযায়ী গ্রাচুয়িটি প্রদানের কোন প্রকার ব্যবস্থা নেই।

আর যে সকল প্রতিষ্ঠানে গ্রাচুয়িটি চালু আছে তাদেরকে গ্রাচুয়িটি এবং সার্ভিস বেনিফিট দুটিই দিতে হবে আলাদাভাবে।
যেহেতু ২৩(৫) ধারাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৩ ধারাতে প্রাপ্ত সকল সুযোগ সুবিধা অন্যান্য সুযোগ সুবিধার অতিরিক্ত হবে।
_________________________________________
বাধ্যতামূলক গ্রুপ বীমা

বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯ এর ধারা-৩৬ অনুযায়ী যদি কোন প্রতিষ্ঠানে ২৫ জন স্থায়ী কর্মী নিয়োজিত থাকেন তবে উক্ত প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক গ্রুপ বীমা চালু করতে হবে।
গ্রুপ বীমা চালু করার পূর্বে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য করতে হবে।
১. গ্রুপ বীমার পরিমান কত টাকা হবে।
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইনে বাধ্যতামূলকভাবে গ্রুপ বীমা চালু করার কথা বলা হয়েছে কিন্তু কত টাকা ক্ষতিপূরণ বীমা থেকে পাওয়া যাবে তা নিদিষ্ট করা নেই।
এটা হতে পারে ১০,০০০/-, ৫০,০০০/- বা ১,০০,০০০/-, যে কোন পরিমান।
২. কোন বিষয়গুলো বীমার আওতায় আসবে।
মৃত্যু এবং স্থায়ী অক্ষমতার ক্ষেত্রে বীমার টাকা পরিশোধ করতে হবে।
স্থায়ী অক্ষমতা বলতে কি বুঝায়?
স্থায়ী অক্ষমতা বুঝাতে ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-২(৫৩) অনুসরণ করতে হবে।
ধারা-২(৫৩) তে বলা হয়েছে প্রথম তফসিলের ১০০% ক্ষতিপূরণ প্রদানকারী বিষয়গুলোকে শতভাগ স্থায়ী অক্ষমতা হিসাবে বিবেচিত হবে।
তাই নিন্মের ৬টি বিষয়কে বীমার আওতায় আনতে হবে স্থায়ী অক্ষমতা হিসাবে।
১. উভয় হাত হারানো বা উপরের অংশ হইতে কাটিয়া ফেলা।
২. এক হাত বা পা হারানো।
৩. উভয় চোখের দৃষ্টি শক্তি হারানো।
৪. উভয় পা বা উরু কাটিয়া ফেলা,এক পা বা উরু কাটিয়া ফেলা বা যেকোন পা হারানো।
৫. মুখাবয়বের মারাত্মক বিকৃতি।
৬. সম্পূর্ণ বধিরতা।
এছাড়াও মৃত্যু আলাদাভাবে এর সাথে যুক্ত হবে।
সর্বমোট সাতটি বিষয়কে বাধ্যতামূলক গ্রুপ বীমার আওতায় আনতে হবে।
_________________________________________
মাস্টার রোল কি?

মাস্টার রোল একটা সাধারন খাতা।
খাতাটির অসাধারন কিছু গুরুত্ব আছে।
ইপিজেড শ্রম আইনের ধারা-১৬ তে মাস্টার রোল নামক পদার্থের সাথে পরিচিত হবেন।
ইপিজেড শ্রম আইনের অধীন লে-অফ নামক যে বিষয়টি আছে তার সাথে মাস্টার রোল বিষয়টি বিস্তৃতভাবে জড়িত।
লক্ষ্য করে থাকবেন যে যখন কোন প্রতিষ্ঠান লে-অফ থাকে, তখন কিন্তু প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মী বা রক্ষনাবেক্ষন বিভাগের কর্মীদেরকে সম্পদ দেখাশোনার জন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কাজ করতে হয়।
ধারা-১৭ অনুযায়ী লে-অফ চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং লে-অফকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের হাজিরা সংরক্ষনের জন্য যে খাতা সংরক্ষন করা হয় তাকেই মাস্টার রোল বলে।
_________________________________________
টার্মিনেইশন (Termination)

বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম অধ্যাদেশ ২০১৯ সবচেয়ে বহুল ব্যবহারিত ধারা হল ধারা-২২।
কোন মালিক কোন স্থায়ী বা অন্য কর্মীকে বিনা কারনে চাকুরী থেকে ধারা-২২ অনুযায়ী অব্যাহতি প্রদান করতে পারেন।
যেকোন স্থায়ী কর্মীকে টার্মিনেইট করার জন্য ১২০ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে অথবা ১২০ দিনের মূল মজুরী টাকা প্রদান করতে হবে।
অন্য কর্মীদের টার্মিনেইট করার জন্য ৬০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে অথবা ৬০ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে।
২২ ধারা অনুযায়ী কোন স্থায়ী কর্মীকে অব্যাহতি প্রদান করলে তাকে ২২(৩) ধারা অনুযায়ী প্রতি বছর কাজের জন্য এক মাসের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে। যা শুধুমাত্র একজন স্থায়ী কর্মী পাবেন এবং ইহা অন্য কর্মীর জন্য প্রযোজ্য নয়।
_________________________________________
Khandokar T Ahmed
Call for Information@ 01945556937. 
 To learn more join in our new group:
"Bangladesh Export Processing Zone (ইপিজেড) Labour Act 2019"

_________________________________________

Post a Comment

0 Comments