অগ্নি নিরাপত্তায় করণীয়


ছবিসূত্র : ৯৯৯ জরুরী সেবা

দেশে গড়ে প্রায় আট হাজার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আর এসব ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণই গড়ে প্রায় সাড়ে ৩শ' কোটি টাকার বেশি। এছাড়াও ঝরে যায় অসংখ্য মূল্যবান জীবন। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, সারাবছর যে অগ্নিকান্ড হয়, তার অর্ধেকেরও বেশি ঘটে বছরের প্রথম ৪ মাসে অর্থাৎ শীত কালে। এদিকে, চলতি শুষ্ক মওসুমে অগ্নি দুর্ঘটনা এড়াতে নিজেরা সতর্ক থাকার পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেয় ফায়ার সার্ভিস।

শুষ্ক মৌসুমে অগ্নিকাণ্ডের এমন ভয়াবহ দৃশ্য বাংলাদেশে এখন অতি পরিচিত। বিভিন্ন সময় বাণিজ্যিক ভবন, বস্তি কিংবা গার্মেন্টস কারখানা পুড়ে যাওয়ার খবর আসে প্রায়ই। এমন ঘটনা প্রতিরোধে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সতর্কতা অবলম্বনের প্রবণতাও ইদানীং বেড়েছে। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই লাগানো হয়েছে, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি ও নিরাপত্তা কর্মীরা বলেন, অগ্নি নির্বাপণের সকল যন্ত্রাপাতি প্রস্তুত করে রাখা হয়, সেই সঙ্গে অগ্নিনির্বাপণের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের হিসেব বলছে, ২০১৩ ও ১৪ সালে সারাদেশে প্রায় ১৬ হাজার অগ্নিকাণ্ডের বিপরীতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ৭শ কোটি টাকারও বেশি। এসব ঘটনায় মারা গেছেন ১৩৬জন, আহত সাড়ে তিনশোরও বেশি। তাই অগ্নি প্রতিরোধের সচেতন হোন এবং অনাকাঙ্খিত দূঘটনা থেকে বাঁচার জন্য কিছু নির্দেশিকা জেনে নিন

  • অসাবধানতাই অগ্নিকান্ডের প্রধান কারণ। তাই অগ্নি প্রতিরোধে সচেতন হোন।
  • রান্নার পর চুলার আগুন সম্পূর্ণ নিভিয়ে ফেলুন।
  • বিড়ি-সিগারেটের জলন্ত অংশ নিভিয়ে নিরাপদ স্থানে ফেলুন।
  • ছোট  ছেলেমেয়েদের আগুন নিয়ে খেলা থেকে বিরত রাখুন।
  • খোলা বাতির ব্যবহার কমিয়ে দিন।
  • ক্রটিযুক্ত বা নিন্মমানের বৈদ্যুতিক তার, ফিটিংস ও সরঞ্জাম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
  • বাসায়, অফিসে বৈদুতিক তার ও ওয়ারিং মাঝে মাঝে অভিজ্ঞ ইলেকট্রিশিয়ান দ্বারা পরীক্ষা করাতে হবে।
  • সম্ভাব্য অগ্নিকান্ড মোকাবেলায় হাতের কাছে সব সময় দু’বালতি পানি বা বালু মজুদ রাখুন।
  • বাসগৃহ, কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি নির্বাপনী যন্ত্রপাতি স্থাপন করুন এবং মাঝে মাঝে সেগুলির কার্যকারিতা পরীক্ষা করুন।
  • প্রতিটি শিল্পকারখানায়, সরকারী ও বেসরকারী ভবনে অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন আইন ও বিধি অনুযায়ী অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করুন।
  • কলকারখানায় অগ্নি নির্বাপণের জন্য পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখুন।
  • গুদাম বা কারখানায় ধুমপান নিষিদ্ধ করুন ও দৃশ্যমান স্থানে সতর্কীকরণ পোষ্টার প্রদর্শনের ব্যবস্থা নিন।
  • ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স হতে অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপন বিষয়ক মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহন করুন।
  • স্থানীয় ফায়ার স্টেশনের ফোন নম্বর সংরক্ষণ করুন এবং যে কোন অগ্নি দূর্ঘটনায় দ্রুত সংবাদ দিন।
  • স্থানীয়ভাবে অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপনের লক্ষ্যে স্বেচ্ছেোসেবক বাহিনী গড়ে তুলুন।
  • মূলত: যে সকল কারণে অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি হয় সে সব কারণ থেকে সাবধানতা অবলস্বন করুন।

Post a Comment

0 Comments